ভারত বলেছে-হাসিনা সরকার দুর্বল হলে যুক্তরাষ্ট্র ভারত কারোই সুখকর হবে না
হাসিনার পক্ষে কড়া বার্তা বাইডেনকে
কূটনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারো জন্যই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। একাধিক বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্রকে সে কথা জানিয়েছে তারা। শুক্রবার ১৮ আগস্ট আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভূমিকায় ভারত যে খুশি নয়, সে বার্তাও ওয়াশিংটনকে দেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লি বলছে, ওয়াশিংটনের মতো তারাও চায় বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক। কিন্তু যেভাবে শেখ হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে, তা প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, তিন সপ্তাহ পরেই নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ভারতের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।সাউথ ব্লক মনে করে, জামায়াতে ইসলামীকে ‘রাজনৈতিক ছাড়’ দেওয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে।
কূটনৈতিক মহল বলছে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্ত অঞ্চল বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে। তালেবান এখন আফগানিস্তানের ক্ষমতার শীর্ষে। মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘুদের কথা বিবেচনা না করেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চুক্তি করে নিয়েছিল, এখন যার ফল ভুগতে হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। নয়াদিল্লি এ কথাই বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে, জামায়াতকে আশকারা দিলে একদিকে যেমন ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে, তেমনই চীনের প্রভাব বাংলাদেশে অনেকটাই বেড়ে যাবে, যা ওয়াশিংটনও চায় না। মনে করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতকে বরাবর রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবেই দেখানোর চেষ্টা করে।
শুধু বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। সূত্র জানিয়েছে, নয়াদিল্লি মনে করছে এই ভিসানীতি বাস্তবায়ন আদৌ উচিত হবে না। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করবে, নতুন এই ভিসানীতির ফলে তারা আমেরিকায় ঢুকতে পারবে না।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে, মার্কিন প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে নতুন এই ভিসানীতি গ্রহণ করেছে।সম্প্রতি আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফরে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সেখানে তারাও বার্তা দিয়েছেন, আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখার প্রশ্নে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক। প্রতিনিধি দলের নেতা কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একটি ইতিবাচক বৈঠক করেছেন।