• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যক্তি করমুক্ত আয় সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব


প্রকাশিত: ৯:২১ পিএম, ৫ মার্চ ২৩ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৯ বার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মূল্যস্ফীতির ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সময় লিস্টেড ও ননলিস্টেড কোম্পানির কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ননলিস্টেড কোম্পানির করপোরেট কর হার আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়।

রবিবার (৫ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে এই প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও মূল্য সংযোজন করের আওতা বৃদ্ধি, আয়কর সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিতকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণের ওপর জোরারোপ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের কাছে পেশ করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহসভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ডিসিসিআই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এনবিআরের কাছে আয়কর, মূসক ও শুল্ক-সংক্রান্ত ৩০টি প্রস্তাব দিয়েছে। লিস্টেড ও ননলিস্টেড কোম্পানির মধ্যকার কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ননলিস্টেড কোম্পানির করপোরেট করের হার আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সাত্তার। মূল্যস্ফীতির ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি।

ব্যারিস্টার সাত্তার উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে ৩০ লাখ টিআইএনধারী আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন, যে কারণে আমাদের কর-জিডিপির হার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এমন বাস্তবতায় আগামী ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা কমপক্ষে ১ থেকে ২ কোটিতে উন্নীত করতে এনবিআরকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।এ ছাড়া কর ও মূসক প্রদান-সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলো সহজে সমাধানের লক্ষ্যে

‘ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইটিএএস)’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস)’ প্রবর্তনের আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার। তিনি ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারে ঊর্ধ্বসীমা তিন কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে চার কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন, কারণ মূল্যস্ফীতির কারণে পণ্য সরবরাহ ও উৎপাদন খরচ অনেকাংশে হ্রাস-বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় প্রকৃত মুনাফা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

যেহেতু ব্যাংকে আমানতের ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ উৎসে কর কর্তন করা হয়, সে ক্ষেত্রে আমানতের ওপর পুনরায় এক্সাইজ ডিউটি আরোপ, আমানতের ব্যয় বাড়িয়ে দেবে এবং ব্যাংকে সঞ্চয় নিরুৎসাহিত করবে। এ অবস্থায় ডিসিসিআই সভাপতি এটিকে প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন। কাস্টমস সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’র অতিদ্রুত বাস্তবায়নের জোরারোপ করেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এইচএস কোড ব্যবহারে ভুল কমানোর লক্ষ্যে এনবিআরের পক্ষ থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা চাইলে এনবিআর থেকে অ্যাডভান্স রুলিং নিতে পারেন।’ এইচএস কোড ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তবে কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে এনবিআর সব সময় কঠোর অবস্থান থাকবে। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আরও সহজীকরণের জন্য তিনি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’র কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিকল্পে দেশে করজাল বাড়ানোর কোনও বিকল্প নেই।