বৃষ্টি দিনের গল্প : পদ্যে আছি, গদ্যেও আছি-তারিক-উল ইসলাম
মেঘের পাখি মেঘ দেখেনি বাতাস গেছে বেঁকে। ছায়াটি তার বিলীন হবে- হয় না।
বৃষ্টি-জলে শার্সিতে মুখ, ক্ষয়িষ্ণু ভোর আঁকা। হতচ্ছাড়া ইচ্ছেগুলো রয় না।
রয় না? রয় তো। অভিমানের উল্টোমুখি পাতা। উল্টে-পাল্টে ফুলেল হয়ে থাকে।
রুল টানা কাগজে নীল খামে ভরা সেই চিঠি।রুমাল যেন জাগিয়েই তো রাখে।
আছি তার খুব কাছাকাছি। নির্ঘুম রাত, জেগে আছি।
#
জানালার ওপারে বৃষ্টি, জলের প্রপাত। তার সাথে পদ্যে আছি, গদ্যেও আছি।
সে’-তে আছি, ‘তুমি’-তেও আছি।
#
আজ সারারাত বৃষ্টি হবে, আজ সারারাত ঘুমাবোনা। জাগবে তুমিও।
লিখেছিলে একবার- বৃষ্টির রশ্মি ধরে বলেছি, তুমি এতো দূরে থাকো কেন?
সেদিন তোমাদের দেয়াল টপকে ঢুকে পড়েছিল সব মেঘ।
পুরো আকাশটাই তোমার চুলে বিলি কাটতে কাটতে এঁকেছিল জলতরঙ্গ।
#
সিঁড়ি ভেঙে উঠে গিয়েছিলে ছাদে। আকাশ ও ছাদের মধ্যে
সেদিন কোনো পার্থক্য ছিলনা।
মুঠোয় মেঘ নিয়ে বলেছিলে- যাও। এসেছিল বৃষ্টি।
ভিজেছিলাম আমিও।
#
তুমি পরেছিলে লাল শাড়ি। ভিজে জবজবে হয়ে গিয়েছিলে।
তখন কেবলই শাড়ি পরতে শিখছো। বোধ করি আগের দিনই কেনা।
তখন অনেক কাপড়ে রঙ উঠতো। লাল শাড়ির সঙ্গে তোমার মুখও লাল হয়ে উঠেছিল।
কপালের লাল টিপ ট্রে-উপচানো মিশেল রঙের ইজেল হয়েছিল।
আহা!সেটাও তো ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল এও এক শিল্প।
#
আমরা একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম। গাছের পাতাগুলি বাতাসে দুলছিল।
আর বৃষ্টির ফোটা তোমার চোখের পাতায় এসে পড়ছিল।
বৃষ্টির শব্দে তোমার নূপুর আলতা ছুঁয়ে হেসে হেসে উঠছিল।
বৃষ্টি, আহা বৃষ্টি! কাঁপছিল গাছেদের পাতা। খানিকটা কাঁপছিলে তুমিও।
পাখিরা এসময় কথা বলেনা। কিন্তু সেদিন পাখি ডেকে উঠেছিল।
অামরা সেদিন অনেক পাখি দেখেছিলাম।
উড়েছিলাম আমরাও।
#
সেদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল। শুনি সেই বৃষ্টির শব্দ। ভেসে আসে পাখিদের ডানার গন্ধ।
সেদিন আমরা সারাদিন ভিজেছিলাম। সেদিন আমরা উড়েছিলাম।
#
পালকে তার স্বপ্নটুকু আঁকা, স্বপ্নটুকু জল-মারবেল
খেলতে খেলতে নির্ঘুম রাত, তারই কাছে থাকা।
*২১ জলাই, ২০১৭
ঢাকা ।