‘বিহারীদের ঘর-বাড়ি উচ্ছেদ বন্ধ করেন’
স্টাফ রিপোর্টার : স্বঘোষিত ভূমিদস্যুদের কবল থেকে বিহারীদের ঘর-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন ন্যাপ বাংলাদেশ এর মহাসচিব নেয়াজ আহমদ খান। তিনি আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ঘুষ খেয়ে বিহারীদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র আমরা কোনোভাবে মেনে নেব না। তিনি বলেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মিরপুর ১০/এ এর ওয়াপদা বিল্ডিং বিহারী ক্যাম্পের এভিন্যু-১ সংলগ্ন জমি স্বঘোষিত ভূমিদস্যুদের মাঝে অবৈধভাবে ১৫টি প্লট বরাদ্দ করেছে। যা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।
আমাদের মিরপুর প্রতিনিধি জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী বাংলাদেশী বিহারী পূণর্বাসন সংসদ (বিবিআরএ) পল্লবী থানা শাখা শনিবার (১৯.০১.২০১৯) রাজধানীর মিরপুর-১০ এর বেনারশী পল্লীর ওয়াপদা বিল্ডিং বিবিআরএ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মিরপুর ১০/এ এর ওয়াপদা বিল্ডিং বিহারী ক্যাম্পের এভিন্যু-১ সংলগ্ন জমি স্বঘোষিত ভূমিদস্যুদের মাঝে অবৈধভাবে ১৫টি প্লট বরাদ্দ ও বিহারীদের ঘর-বাড়ী উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাংলাদেশী বিহারী পূণর্বাসন সংসদ (বিবিআরএ) পল্লবী থানা শাখা গতকাল শনিবার সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ (ন্যাপ বাংলাদেশ) এর মহাসচিব নেয়াজ আহমদ খান সরকারকে বিহারীদের মানবেতর জীবনের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে দ্রুত পূণর্বাসনের দাবী জানিয়ে বিহারী ক্যাম্পের নিরক্ষর, অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত ও মজলুম উর্দূভাষী বিহারী জনগোষ্ঠিকে দাপুটে ভূমিদস্যুদের হাত হতে রক্ষার দাবী জানান। সমাবেশে বিশেষ অতিথি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার পারভেজ বলেন যে, ভূমিদস্যু পাগলা কাসেম, ইদ্রীস আলী ইদ্দা ও জব্বার চক্র ওয়াপদা বিল্ডিং ক্যাম্পের জমি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের দূর্ণীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ১৫টি প্লট বানিয়েছে।
তারা পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্যাম্পের জায়গা দখল নিতে চায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তাগণ বলেন যে, একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্র মিরপুরে প্রায় ২ যুগ যাবৎ সক্রিয়। এরা এখন ঢাকার কোথাও কোন জমি না পেয়ে বিহারী ক্যাম্পের অসহায় বাসিন্দাদের জায়গার উপর বুভুক্ষুর ন্যায় ঝাপিয়ে পড়েছে।
একএক সময় একএকটি বিহারী ক্যাম্পকে টার্গেট করে এরা রাতারাতি যেনতেনভাবে প্লট বরাদ্দ নেয়া ও দখল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বক্তাগণ সরকারকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের দাবী জানান। বিহারী নেতৃবৃন্দ নির্বাচনের পূর্বে বিহারী নেতা শেখ আলী ঈমাম পাপ্পু, মুন্না, বাবু ও ওয়াহিদ এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল শুরু হতেই পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও ওসি অপারেশন ইমরান এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জলকামান নিয়ে বিহারীদের বিক্ষোভ মিছিলের গতিরোধ করে। আয়োজকদের নিকট হতে মাইক হাতে নিয়ে ওসি নজরুল বলেন যে, মিছিলের অনুমতি নেই। তিনি ভূমিদস্যুদের তৎপরতার ব্যাপারে সরকারকে জানানোর কথা ক্যাম্পবাসীদের জানান। কর্মসূচীর সভাপতি ও বিবিআরএ এর পল্লবী থানার সভাপতি ওসমান গনি মহাজন কে মাইকে বিক্ষোভ মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণা করতে বাধ্য করেন ওসি নজরুল।
ন্যাপ বাংলাদেশ নেতা নেয়াজ আহমদ খান সহ ৪ বিহারী নেতাকে আলোচনার নাম করে পল্লবী থানায় নিয়ে যান ওসি নজরুল ইসলাম। মিছিলে বিপুল লোক সমাগম হলেও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গভীর রাত জুড়ে পল্লবী এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।