• শনিবার , ১৬ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্ব মানব ধর্ম প্রচারক জয় গুরু মনির শাহ নিয়ে নানা কাহিনী


প্রকাশিত: ১২:২৫ এএম, ২৩ মার্চ ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৩৯ বার

1গাজীপুর থেকে মোস্তফা কামাল প্রধান:  গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা পিয়ার আলী জামে মসজিদে ২১ মার্চ মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় কথিত বিশ্ব মানব ধর্ম প্রচারক জয় গুরু মনির শাহ’র  ইসলামী অপব্যাখ্যা ও অসামাজিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে আলেম-ওলামাগনের এক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরামর্শ সভায় বক্তারা ওই ভন্ড পীর মনির শাহকে ৩ দিনের মধ্যে এলাকা থেকে তাড়াতে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
2
যদি ৩ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগীতা না পায় তাহলে জানমাল সহ তওহীদী শক্তি দিয়ে ঈমানি দায়িত্ব পালনের ঘোষনা দেন বক্তারা । আলেমগন বলেন, যুগে যুগে এমন অনেক ভন্ড পীর ও ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের আবির্ভাব হয়েছিল। কিন্তু তওহীদী শক্তির কাছে ওই সমস্ত ফেৎনা সৃষ্টিকারীরা বার বার পরাজিত হয়েছে।

বেধে দেয়া সময়ের মাঝে ভন্ড পীর মনির শাহকে তাড়াতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে আগামী ২৮ মার্চ মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে  এ ব্যাপারে প্রতিবাদ সমাবেশে চূড়ান্ত— সিদ্ধান্ত নেয়া হবে  বলে ঘোষনা দেন সভায় উপস্থিত আলেমগন।  উল্লেখ্য বারতোপা ফুলানিরসীট গ্রামে বন নিধন করে ১ হেক্টর বনভূমিতে হেরাবন গড়ে কথিত মানব ধর্মের প্রচারক জয় গুরু মনির শাহ। সে প্রায় ১ যুগ ধরে অন্যত্র থেকে এসে এখানকার সহজ সরল মানুষকে ইসলামের অপব্যাখ্যা ও অসামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।

বনের গাছ পালা কেটে বিশাল বনভূমি দখল, মদ, গাঁজা সহ তার নানা অপকর্মে ও অপতৎপরতায়  সোচ্চার হয়ে উঠে স্থানীয় আলেম-ওলামা, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল। সম্প্রতি বিষয়টি শ্রীপুর উপজেলা আইন-শৃক্সখলা সভায় তুলে ধরেন মাওনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, জাহাঙ্গীর আলম খোকন। তখন ভন্ড পীরের বিশাল বনভূমি দখলের খবর মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে টনক নড়ে বন কর্মকর্তাদের।

উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় বন কর্মকর্তাদের বিশেষ অভিযানে গত ২০ মার্চ সোমবার দুপুরে কথিত জয়গুরু মনির শাহ’র আস্তানা উচ্ছেদ করে প্রায় ১ হেক্টর বনের জমি উদ্ধার করে বন কর্মকর্তারা। সে সময় উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেয়ায় ওই পীরের ৬ ভক্তকে আটক করে বন কর্মকর্তারা।  কিন্তু বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানে বনের জমি উদ্ধার হলেও ভন্ড পীরের ভন্ডামী থেকেই যায় এক মহিলা ভক্তের দান করা ৭ শতাংশ জমির ওপর।

সেখানে তার আস্তানা সীমানা সীমিত হয়ে গেলেও ভন্ডামীর রাজত্ব বেড়েই চলছে বলে দাবী করেন শ্রীপুর উপজেলার বিশিষ্ট আলেম ও ওলামাগণ।   সভায় কথিত ওই ভন্ড পীর ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করে যাচ্ছে বলেও দাবী করেন শ্রীপুরের আলেম সমাজ।  তাই অতি দ্রুত কথিত মানব ধর্ম প্রচারক ভন্ড পীর জয়গুরু মনির শাহকে  এলাকা থেকে তাড়াতে স্থানীয় জন প্রতিনিধি, নেতৃবৃন্দও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার জানান, নামের মূল যে আদর্শ, মূল যে শিক্ষা সে আলোকে সকল প্রকার কার্যক্রমে সকলের সহযোগীতা করতে হবে। তবে ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অপব্যাখ্যা এবং অপপ্রচার দেয় তাদের তিনি ঘৃণা ও নিন্দা জানান এবং তা প্রতিকারের জন্য সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। তিনি আরো জানান, ইসলামের অপব্যাখ্যা এবং অপপ্রচার যাতে কেউ না দিতে পারে, সেদিকে সজাগ থাকার ব্যাপারে নাগরিক হিসাবে আলেম-ওলামা সকলেরই দায়িত্ব আছে। এ ব্যাপারে আলেমদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি পেলে উলে­খিত বক্তব্য অনুযায়ী পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সভার আহবায়ক ছিলেন মাওনা বাজার পিয়ার আলী জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম আব্দুল আল সুজাত। আল্লামা ­আশেকে মোস্তফার সভাপতিত্বে ও মুফতি মামুনের উপস্থাপনায় পরামর্শ সভায় বক্তব্য রাখেন,  মাওনা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন, মাওনা বাজার পিয়ার আলী জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আতাহার আলী, আলহাজ্ব মোঃ লিয়াকত আলী, মুফতি জামাল উদ্দিন, আবু সাঈদ ওরফে সুফী হুজুর, মুফতি আব্দুল­াহ, সাবেক কাউন্সিলর মোঃ আরিফুল ইসলাম সরকার, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোস্তফা কামাল আকন্দ,  নূর মোহাম্মদ,  সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন, তোয়ায়েল আহমেদ শ্যামল, আব্দুল­াহ আল মামুন, হাজ্বী রফিক মাদবর, শ্রীপুরের বিশিষ্ট আলেম-ওলামা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।