বিদেশীদের পদলেহন করেও বিএনপি বেকায়দায়: হাছান
বিশেষ প্রতিনিধি : সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে এখন বিএনপি নিজেই বেকায়দায় পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল মালিক সমিতি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ সেটা হচ্ছে বিএনপির সাংঘর্ষিক রাজনীতি। বিএনপির মিত্রদের দেশবিরোধী অপতৎপরতা, বিদেশিদের পদলেহন এবং বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া- এগুলো করে তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। কিন্তু সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে এখন বিএনপি নিজেই বেকায়দায় পড়েছে। কারণ ১০ ডিসেম্বর তারা ভেবেছিলো নয়াপল্টনের সামনে একটি সমাবেশ করতে পারবে, বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারবে। কিন্তু সেটি তারা করতে পারেনি। ১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপি বুঝতে পেড়েছে তাদের শক্তি ও সামর্থ্য কতোটুকু। তিনি বলেন, এরপরও বিএনপি এবছর দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করবে। তবে আমরা তাদের সর্বোচ্চ অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা ২০১৩-১৪-১৫ সালে দেখেছি। আমরা সেগুলো সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সবচেয়ে বড় যে বিষয় সেটা হলো সারাবিশ্বে সংকটময় পরিস্থিতি চলছে। করোনা মহামারি চলে গিয়েছিল, দুইমাস আগেও তাই ভেবেছিলাম। কিন্তু দেখা গেলো করোনা যায়নি। চীনসহ কয়েকটি দেশে করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। পাশাপাশি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে ভালো রাখা এবং সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সেটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। গত তিন বছরও চ্যালেঞ্জ ছিলো, সেটা আমরা মোকাবিলা করতে পেরেছি। আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ বছরও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারবো।
তিনি বলেন, মানুষ কিন্তু ভুলে যায় আগে কেমন ছিলো। আমরা ক্ষমতায় আসার আগে বিদ্যুতের আওতায় ছিলো মাত্র ৪০ শতাংশ। এখন বিদ্যুৎসুবিধা পায় শতভাগ। কিছুদিন আগে যখন লোডশেডিং হলো তখন মানুষ হৈ হৈ রৈ রৈ শুরু করেছিলো। কিন্তু এখন আর লোডশেডিং নেই। সে খবর পত্রিকার পাতা বা টিভির খবরে নেই। তো মানুষ অতীত ভুলে যায়। আগে যে রাস্তাঘাট ছিলো না, যে রাস্তায় রিকশা নিয়ে চলা দুষ্কর ছিলো, এখন সেখানে গাড়ি চলে। এ বিষয়গুলো মানুষ ভুলে গেছে। ১৪ বছর আগে কি ছিলো? আমরা ক্ষমতায় আসার আগে তো সব বদলে দিতে পারিনি। আর আজকে কী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছি সে অবস্থা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। এক্ষত্রে আমি গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো হবে বলে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির নেতারা এসমস্ত কথা প্রতিদিন বলেন। বর্তমান অবস্থা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে জনগণতো দূরের কথা তাদের নেতাকর্মীরাও নেই।তিনি বলেন, কর্মীরা এখন নেতাদের কাছে প্রশ্ন করে সরকার বলেছিল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে, সেখানে আপনারা করলেন না কেন? না করে লাভ কী হলো? এটাই হচ্ছে বিএনপির নেতাদের প্রতি কর্মীদের প্রশ্ন। এখন জনগণতো দূরের কথা তাদের কর্মীরাও তাদের ডাকে সারা দিচ্ছে না। তাদের এই নেতৃত্ব কতোটুকু করতে পারবে সেটা তারা ভালো জানে।
মন্ত্রী বলেন, গত ডিসেম্বরে বিএনপি দু’টি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি হচ্ছে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার গো ধরা। সেটা করে তাদের রাজনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। অপরটি হচ্ছে তাদের সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা। এতেও তাদের ক্ষতি হয়েছে। এই প্রশ্নই বিএনপির ভেতরে ঘোরপাক খাচ্ছে। কেন এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। খন্দকার মোশাররফ হোসেনরা সে সিদ্ধান্তের জবাবে দিতে পারেন না তো, এ জন্যই উচ্চবাচ্য করে কর্মীদের আস্বস্ত করতে চান।