বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসায়-মার্শা বার্নিকাট
আন্তজার্তিক ডেস্ক রিপোর্টার: বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। বিষয়টি সরকার যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছে বলে মনে করেন তিনি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতাবিষয়ক এক আড্ডায় প্রশ্নোত্তরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার দেশের এই অবস্থান জানান। এছাড়া আইনের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানসিকতা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নারী সমাজের অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বার্নিকাট।
ফেসবুকে গণমানুষের সঙ্গে কথোপকথনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে নারীর ক্ষমতায়ন, তৈরি পোশাক শিল্প খাতে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর এগিয়ে যাওয়া, জিএসপি ইস্যু, দুই বিদেশি হত্যা পরবর্তী নিরাপত্তা পরিস্থিতি, নারীর প্রতি যৌন হয়রানিসহ নানা বিষয়ে বার্নিকাট কথা বলেছেন। তুলে ধরেছেন নিজের অভিজ্ঞতার কথাও।জিএসপি প্রসঙ্গে মার্কিন দূত বলেন, জিএসপি রহিত করার পরও মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রতি বছর বাড়ছে। আর এই রপ্তানিতে এদেশের নারীরাও লাভবান হচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নারীরাই চালিকা শক্তি। এখনো যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পোশাকের বড় বাজার। আর জিএসপির আওতায় কোনো দেশের পোশাক খাতই মার্কিন বাজারে সুবিধা পায়নি। জিএসপির আওতায় এক শতাংশেরও কম পণ্য মার্কিন বাজারে যাচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ জিএসপি ফিরে পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তার মায়ের সময়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের কথা ভাবতে গেলে আমার নিজের দেশের অভিজ্ঞতায় চলে যাই। চল্লিশের দশকে রেকর্ডসংখ্যক মার্কিন নারীর সঙ্গে আমার মাও কাজে যোগ দিয়েছিলেন। যেমনটা আজকের বাংলাদেশের নারীরা করছেন। যদিও আমার মা পরে পরিবারকে সময় দিতে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন, তিনি কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার আলোকে আমার বোন ও আমাকে গড়ে তোলেন। একইসঙ্গে তিনি আমাদের ভালো মা, ভালো স্ত্রী হতেও শিখিয়েছেন। তিনি আমাদের সুশিক্ষা ও চাকরির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন, যাতে আমরা নিজেদের জীবন ও সমাজে স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে এগিয়ে যেতে পারি।
একই ঘটনা বাংলাদেশের মেয়েদের বেলায় ঘটছে দেখে আমি খুব গর্বিত।যুক্তরাষ্ট্র নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও এখনো সে দেশে প্রেসিডেন্ট পদে কোনো নারীকে দেখা যায়নি। এর মানে কি যুক্তরাষ্ট্র নারী প্রেসিডেন্ট দেখতে এখনো প্রস্তুত নয়? এমন এক প্রশ্নের জবাবে বার্নিকাট বলেন, অনেক বাংলাদেশি আমাকে এই প্রশ্নটি করেন। আমি শুধুই গর্বের সঙ্গে বলব, মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই বড় দলেরই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নারীদের দেখা যাচ্ছে।
আসুন, দেখি ২০১৬ সালের নভেম্বরে কি ঘটে।এক প্রশ্নের জবাবে বার্নিকাট ইতালির নাগরিক সিজার তাভেলা ও জাপানি নাগরিক হোসি কোনিওর পরিবারের প্রতি আবারো সমবেদনা জানিয়ে বলেন, এই দুই মর্মান্তিক হত্যাকা- আমাদের সবাইকে নাড়া দিয়েছে। বিদেশিদের প্রতি বাংলাদেশের উষ্ণ আতিথিয়েতাকে আমরা খুব প্রশংসা করি। আমাদের অনুরোধে যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে সাড়া দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।