বিদেশি কোনো শক্তি শেখ হাসিনাকে সরাতে পারবে না: শাহরিয়ার
লাবণ্য চৌধুরী : কোনো বিদেশি শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না বলে সোজা জানিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, নির্বাচন অথবা নিষেধাজ্ঞা কোন কিছু নিয়েই, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন অস্বস্তি নেই। তিনি বলেন, কোন জোট বা দেশের সঙ্গে যুক্ত হতেও আন্তর্জাতিক চাপে নেই বাংলাদেশ।তিনি আরো বলেছেন, ‘কোনো বিদেশি শক্তির চাপে শেখ হাসিনা প্রভাবিত হন না। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং এটি তাঁর অহংকার। এটাই তাঁর গর্ব এবং এটাই তাঁকে চালিত করে।’
বুধবার (৩১ মে) দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অ্যাট দ্য ক্রসরোড: ইনকনভারসেশন উইথ মো. শাহরিয়ার আলম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, নির্বাচন, বিদেশি চাপ, প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর, জিডিআই, প্রতিরক্ষা, রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় একথা বলেন তিনি।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী পরিচালক ও প্রকাশক তারিন হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিবৃন্দ।
রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে এই অলোচনা সভায় শাহরিয়ার আলম বলেন, নিকট ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে কাজ করছে ঢাকা। কোনো বিদেশি শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না।তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সাম্প্রতিক ভিসা নীতি কোন ভাবেই নিষেধাজ্ঞা নয়। এমনকি এটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কোন উপায়ও নয়। বাংলাদেশ কোনও বিদেশি চাপে প্রভাবিত হয় না। কোনও বিদেশি শক্তির চাপে শেখ হাসিনা প্রভাবিত হন না। বাংলাদেশ নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করতে এরইমধ্যেই নতুন আইন প্রণয়নসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরিপক্ব সম্পর্ক রয়েছে। তবে অন্যান্য যেকোনো সম্পর্কের মতো এখানেও কিছু অস্বস্তিকর উপাদান রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় অস্বস্তিকর হচ্ছে- বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত না দেওয়া।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, আমরা আশা করি, ওই নীতির যথেচ্ছ ব্যবহার হবে না। ভিসানীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার বিষয়টি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কোনও যুক্তি দেখি না। ২০২১ সালের পর নতুন কোনও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। আমি কোনও কারণ দেখি না, যার কারণে সামনের বছরগুলোতে কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যবসা ও বাণিজ্য কোনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশ আরেক দেশের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মুহূর্তেও বাণিজ্য বন্ধ করেনি। এটি যদি সত্যি হবে, তবে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বাণিজ্যকে কেন জড়িয়ে ফেলা হবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আমরা রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ করছি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোডে’ যুক্ত হয়েছে এবং আরও অনেক দেশ এর সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) নতুন উদ্যোগ। এটি নিয়ে আলোচনা হওয়া ভালো। কারণ আমরাও জানি না- এটিতে যুক্ত না হওয়ার মতো কোনও উপাদান আছে কিনা বলে তিনি জানান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি বলেছে, পুলিশ, প্রশাসন এবং যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে দেখে নেয়া হবে এবং এটি বড় ধরনের হুমকি। আশা করবো, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বিবেচনা করবে। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি করাটা এখন হবে অবৈধ এবং এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। আমরা আশা করি সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে।’তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছে, পুলিশ, প্রশাসন এবং যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে দেখে নেওয়া হবে এবং এটি বড় ধরনের হুমকি। আমি আশা করবো, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বিবেচনা করবে। তবে আমরা আশা করি, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ বিষয়টি শেষ হয়ে গেছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা সেটিতে ফিরে যাবো না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি করাটা এখন হবে অবৈধ এবং এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।’