বাস্তবের স্পাইডারম্যান ফ্রান্সের নায়ক মামুদু
ডেস্ক রিপোর্টার : বাস্তবের স্পাইডারম্যান ফ্রান্সের নায়ক মামুদু এখন প্রসংশায় পঞ্চমুখ। সবার মুখে মুখে তার নাম। জানা গেছে, পাঁচতলার বারান্দার রেলিং থেকে ঝুলছিল একটি ছোট্ট শিশু। কিভাবে সে ওইখানে গেল কেউ জানে না।বারান্দায় কেউ নেই যে ধরে ওকে তুলে নিয়ে আসবে। বাচ্চাটা হাত ছেড়ে দিলে সোজা নিচে এসে পড়বে। নিচে অনেক মানুষ জমে গেছে, কিন্তু কি করা যায় কেউ বুঝতে পারছে না।
হঠাৎ তরতর করে বিল্ডিংয়ের সামনের দিক বেয়ে উঠতে শুরু করে এক তরুণ। মুহূর্তের মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে পৌঁছোয় পাঁচতলার বারান্দায়। কোনো রকমে রেলিং ধরে বসেই এক হাতে টেনে তুলে বারান্দার ভিতর নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসে বাচ্চাটাকে।
পুরো ফ্রান্সে নায়ক বনে যাওয়া ২২ বছর বয়সী ওই কৃষ্ণাঙ্গ তরুণের নাম মামুদু গাসামা। সে আফ্রিকার দেশ মালি থেকে যাওয়া একজন অভিবাসী। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তাকে সবাই ডাকছে সুপার হিরো ‘স্পাইডার ম্যান’ বলে। মামুদুর বিল্ডিং বেয়ে ওঠার অসধারণ ভিডিওটি ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে গেছে। গত দু’দিনে এটি শুধু ফেসবুকেই দেখা হয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষবার।
এক তলা থেকে বেয়ে বয়ে পাঁচতলার বারান্দায় পৌঁছতে মামুদুর লেগেছে এক মিনিটেরও কম সময়। ততক্ষণে পাশের বারান্দা থেকে একজন লোক বাচ্চাটাকে ধরার চেষ্টা করছিলেন, পারছিলেন না। মামুদু গিয়ে টুপ করে ধরে তাকে বারান্দার ভিতর নিয়ে আসে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন সোমবার মামুদু গাসামাকে তার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের রিপোর্টে জানা যায়, মামুদু ওই এলাকায় গিয়েছিলেন একটি রেস্তোরাঁয় বসে ফুটবল খেলা দেখতে। তখন তিনি দেখতে পান ওই বিল্ডিংয়ের সামনে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে। বাচ্চাটাকে বারান্দা থেকে ঝুলতে দেখেই তিনি দ্রুত এগিয়ে চান তাকে বাঁচাতে।
রিপোর্টারদের মামুদু বলেন, তিনি বাচ্চাকাচ্চা খুবই পছন্দ করেন। তার সামনে একটা ছোট্ট শিশু আঘাত পাবে, এটা তিনি কিছুতেই মানতে পারছিলেন না।তিনি আরও বলেন, ওকে তুলে ধরে যখন জিজ্ঞেস করলাম, সে ওই কাজ কেন করেছিল, ও কোনো জবাব দেয়নি।প্যারিসের মেয়র অ্যান হিডালগো মামুদুর সাহসিকতা ও পরোপকারী মনোভাবের প্রশংসা করে একটি টুইট করেছেন।
হিডালগো মামুদুর সাথে কথা বলার জন্য ফোন করেছিলেন। মামুদু তাকে জানান তিনি কয়েকমাস আগে ভাগ্য বদলাতে প্যারিসে গিয়েছেন।প্যারিসের মেয়র লেখেন, ‘তার সাহসিকতা সব নাগরিকের জন্য একটি উদাহরণ। প্যারিস শহর তাকে ফ্রান্সে স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিতে সবরকম সহায়তা করবে।’