• সোমবার , ২৫ নভেম্বর ২০২৪

‘বাবরের প্রেতাত্মারা চাননি বলে ভোট পেয়েও জেতেনি হাসিনার মনোনিত প্রার্থী মোক্তার সর্দার’


প্রকাশিত: ১:৫৩ এএম, ৩ মে ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৮৬ বার

[print-me]election-1বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মগবাজার সর্দার-বাড়ির ইজ্জত পাংচার করে দিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রেতাত্মারা-! বাবর এখন ক্ষমতায় নেই কিন্তু তার রেখে যাওয়া একই চরিত্রের লোকজন রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তারা চাননি-সরদার বাড়ির প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনিত প্রার্থী মোক্তার সর্দার যেন না জেতে।ফলে যা হবার তাই হয়েছে- মগবাজারের জনগনের ভোট কেড়ে নিয়েছে বাবরের প্রেতাত্মারা- এতে  জেতা ফল পাল্টে গেছে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে।পুলিশের সহযোগীতায় ভোট জালিয়াতির এমন অভিযোগ রমনা থানার মগবাজার এলাকার মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। সবাই বলাবলি করছে, মোক্তার সর্দারকে হারিয়ে দেয়া মানে গনতন্ত্রকে হারিয়ে দেয়া, শেখ হাসিনাকে হারিয়ে দেয়া।

এলাকাবাসি সূত্র জানায়, মগবাজার সর্দারবাড়ির সঙ্গে বেঈমানি করা মানে শেখ হাসিনার সঙ্গে বেঈমানি করা, তাঁর হাতকে দূর্বল করা।এর কারণ সম্পর্কে  এলাকাবাসি জানান, এই সর্দার বাড়ি থেকেই বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের সোপান হয়েছে, ওসমান গনি সর্দারের নেতৃত্বে ৭ মার্চের আবাল বৃদ্ধ বনিতার মিছিল গেছে রেসকোর্স ময়দানে,

এই সর্দার বাড়ি থেকেই ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে গন স্বাক্ষর অভিযানের সোপান রচনা করেছেন মতিয়া চৌধুরী, দিপু মনি ও আসমা জেরিন ঝুমু।মোক্তার সর্দার সেই তাঁদের লোক বলে বাবরের প্রেতাত্মরা তাঁকে সহ্য করতে পারেন না।

কারণ, ওয়ান ইলেভেনের সময় তাদের কোন অস্তিত্ব ছিল না, তখন ওরা মেজর মান্নানের সহযোগী ছিল, তাছাড়া মোক্তার সর্দার’তো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের সঙ্গে কোন দিন বেঈমানি করতে পারবেন না, ভোট জালিয়াতি করতে পারবেন না।

বিশেষ সংস্থা সূত্র জানায়, মোক্তার সর্দার মগবাজারের ৭টি কেন্দ্রে জিতেছে।এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-ইস্পাহানি স্কুল,প্রভাতি স্কুল, নজরুল স্কুল, মগবাজার প্রাথমিক স্কুল, ও শাহনূরী বয়েজ।অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী জিতেছে মাত্র শাহনূরী বালিকা স্কুলের কেন্দ্রে।এই কেন্দ্রে সংযুক্ত মডার্ণ ও হলিচাইল্ড স্কুল।

ঘটনা সম্পর্কে মোক্তার সর্দার বললেন, আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনা, ভোট কারচুপি জাল জুয়াচুরি করিনা বলেই কি এভাবে দলীয় নেত্রীর মনোনিত প্রার্থীকে হারিয়ে দেয়া হবে।

dcc jal vote-3-www.jatirkhantha.com.bd সূত্র জানায়,ভোটের দিন রাত ৩টায় মগবাজার শাহনূরী মডেল স্কুলে জাল ভোটের মহৎসব হয়েছে থানা পুলিশের পাহারায়।ওখানেই সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রেতাত্মা বলেছে, ‘ঘোড়া ডিঙ্গাইয়া ঘাস খাইছস তুই পাস করতে পারবি না- আমার এলাকায় তুই কাউন্সিলর হতে পারবিনা-।

সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া দু’শতাধিক অভিযোগের মধ্যে ১৭টি অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যারা সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে কাউন্সিলর পদে লড়েছিলেন। যাদের অনেকেই সরাসরি ভোট লুটের অভিযোগ করে পুননির্বাচন দাবি করেছেন।

দীর্ঘদিন পরে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সংখ্যা বেড়ে যায়। স্থানীয়ভাবে নানা চেষ্টা করেও নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ। ফলে ঢাকার দুই অংশের ৯৩টি ওয়ার্ডে ৬১জন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে থেকে যান। ২৮ এপ্রিলের ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। দক্ষিণের ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে জয়ী হন ১০জন বিদ্রোহী প্রার্থী।

নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া অভিযোগকারীদের মধ্যে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন রমনা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোক্তার সরদার। তিনিও ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন।

তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ওই ওয়ার্ডে ৭টি কেন্দ্রে তিনি তিন হাজার ৪২৪ ভোট পেয়েছেন। অথচ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়জুল মুনির চৌধুরী দুই হাজার ৪৭৩ ভোট পাওয়ার পরও জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ মনির হোসেন। তিনি নির্বাচন কশিশনের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর ওয়ার্ডে ২০টি কেন্দ্রে পাওয়া দেখানো হয়েছে তিন হাজার ৪৮৯। অথচ তিনি ওই ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে পেয়েছেন তিন হাজার ৮২৭ ভোট।

মনির হোসেন ভোট গণনার অনেক আগেই অনেক কেন্দ্রে তার পোলিং এজেন্টদের কাছে রেজাল্টশিটে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমার এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে মনমতো রেজাল্টশিট তৈরি করা হয়। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের অনেকেই এ দুর্নীতিতে অংশ নেন।’ রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, তার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী ইলিয়াছুর রহমান অভিযোগ করেন, নির্বাচনের দিন দুপুর ১২টার দিকে ওই ওয়ার্ডের ৩৮ কেন্দ্রে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং প্রতিটি কেন্দ্রের প্রতিটি বুথ থেকে তাঁর পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে ইচ্ছামতো সিল মারে। কেন্দ্রের বাইরে থাকা তাঁর এজেন্টদেরও মারধর করা হয় এবং ওই সব এজেন্টের কাছে থাকা ১০টি ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

আমি তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে জরিনা সিকদার স্কুল ও রায়েরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যাই। আমাকে দেখার সাথে সাথে ওরা কয়েকটি বোমা ও কয়েক রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে। পুলিশের সাথে গোলাগুলি হয় এবং আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। ওই সময় হাজারীবাগ থানার সেকেন্ড অফিসারের সহযোগিতায় পুলিশ প্রটেকশনের মাধ্যমে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। ইলিয়াছ তার আবেদনে এই ‘ভোট লুটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পুনর্র্নিবাচনের ব্যবস্থা এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা’র দাবি জানান।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রেজাউল হক ভূঁইয়া, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ মো. আলমগীর নির্বাচনে কারচুপি, কেন্দ্র দখল ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে ইসির কাছে প্রতিকার চেয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আরেক প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ফল প্রকাশ না করে ইচ্ছামতো ফল প্রকাশ করে তার প্রতিপক্ষকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, রিটার্নিং অফিসার ফলাফল ঘোষণা করে দিলে নির্বাচন কমিশনের আইনত আর কিছুই করার নেই। কমিশনে এ বিষয়ে অভিযোগ-আবেদন করেও কোনো লাভ নেই। অভিযোগকারীদের এখন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া অভিযোগগুলো নথিভুক্ত করে নিষ্পত্তি করা হবে।