বানচালের ষড়যন্ত্রে -বিএনপি শেষ মুহুর্তে ভোটে আসতে পারে :প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একটি মহল বাংলাদেশে অনির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সেই কারণে নির্বাচন বানচাল করতে পারলে একটি অনির্বাচিত সরকার এনে তাদের ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। রোববার সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তিনি এসব কথা বলেন।বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সংসদ সদস্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করতে বিএনপি শেষ মুহুর্তে নির্বাচনে আসতে পারে বলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্তব্য করেন বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
দলীয় প্রধান সংসদ নেতা শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে একঘন্টারও বেশি সময় ওই সভা হয়। সভায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।সংসদ সদস্যদের মধ্যে মোতাহার হোসেন, শামীম ওসমান, নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, কাজী কেরামত আলী, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদভী, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, আরোমা দত্ত বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলেন। তিনি বলেন, তারা জানে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে। এ জন্য তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। নির্বাচন বানচাল করে একটি অনির্বাচিত সরকার বসাতে চায়। এটা করতে পারলে তাদেরকে তারা ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।বৈঠক সূত্র জানায় জরিপের ভিত্তিতে যোগ্যদের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, বলেছেন, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়া হবে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
কাউকে জয়ী করার দায়িত্ব নিতে পারবেন না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ভোট অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এই ভোটে সবাইকে জিতে আসতে হবে। কাউকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নেওয়া হবে না। আমি কারো চেহারা দেখে মনোনয়ন দেবো না। দেখে শুনে যে জনপ্রিয় তাদের নমিনেশন দেবো। এখানে যারা আছেন সবাই মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। যাকে নমিনেশন দেবো তার জন্য কাজ করতে হবে। নমিনেশন পান না পান নৌকার বিরোধিতা করা যাবে না।দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন শেখ হাসিনা।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারে, সে কারণে নির্বাচন বাদ দিয়ে অনির্বাচিত সরকারকে চায় দেশি-বিদেশি অনেকেই। কারণ, অনির্বাচিত সরকার হলে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে সুবিধা হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মনোনয়ন দেওয়া হবে বিভিন্ন জরিপের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, যার গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে হবে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। তারা আন্দোলন করতে চায়, করবে। কোন সমস্যা নেই। আমরা বাধা দেবো না। তবে, অগ্নিসন্ত্রাস, ভাংচুর করলে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সব মোকাবিলা করে অভ্যস্ত। হেফাজত মোকাবিলা করেছি। জামাত-বিএনপি মোকাবিলা করেছি। এবারও করবো।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। আমরাও যাতে নির্বাচনে অংশ না নিতে পারি সেই ষড়যন্ত্র চলছে। এটা হলে তারা তাদের ইচ্ছেমত ব্যক্তিদের ক্ষমতায় বসাতে পারে। তবে, এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান অর্ন্তকোন্দল ভুলে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করে শেখ হাসিনাকে আবরও প্রধানমন্ত্রী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।