বাকযোদ্ধা ড. পিয়াস করিম স্মরণে: শহীদ মিনার এখন আওয়ামী স্বৈরাতন্ত্রের মিনার
মঞ্চে এবং দর্শকের সারিতে উপস্থিত সম্মানিত সুধীবৃন্দ,সবাইকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।
বাকযোদ্ধা ড. পিয়াস করিমের আকস্মিক মৃত্যুর পর শহীদ মিনারে তার অন্তিম শয়নকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ করেছেন। এই নিষিদ্ধ করণটা সম্ভব হয়েছে কতিপয় বিভ্রান্ত রাজনৈতিক কর্মীদের সহযোগিতায়।
তবে, আমার চোখে শহীদ মিনারে ড. পিয়াস করিমের মরদেহ নেওয়ার অধিকারের চাইতে বড় ইসু হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতার অধিকার। অর্থাৎ, রাইট টু অ্যাসেম্বল বা গণ জমায়েতের অধিকারের চাইতে, এখন বড় ইসু হচ্ছে, যে মিনিমাম বাক স্বাধীনতার এখনো আছে, সেটা সম্পূর্ণভাবে হারানোর দুঃসম্ভাবনা।
ড. পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নিষিদ্ধ করণের একটা ফল হতে পারে যে, এখন থেকে টেলিভিশনের টক শোতে, অথবা পত্রপত্রিকার কলামে আওয়ামী লীগের যে কোনো সমালোচনা করতে বক্তা ও লেখকরা আরো সঙ্কুচিত, দ্বিধান্বিত ও ভীত হতে পারেন।
অন্যভাবে বলা চলে, শহীদ মিনারে ড. পিয়াস করিমের মরদেহ নিষিদ্ধ করণের ফলে, প্রকারান্তরে টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকায় এবং ইন্টারনেটে ফেইসবুকে মানুষের বলা ও লেখার স্বাধীনতা হরণ, আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল।
এর ফলে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের কলংক এখন শহীদ মিনারকেও কলংকিত করল। দুরাচারী আওয়ামী লীগের বিকট দুর্গন্ধ এখন শহীদ মিনার থেকেও ছড়িয়ে পড়েছে। এই মিনার এখন একটি অপবিত্র নোংরা জায়গা। সুতরাং এই শহীদ মিনারে আর কোনো ভদ্র এবং পরিচ্ছন্ন ব্যক্তির মরদেহ আনা উচিত হবে না।
খবরে পড়লাম, কতিপয় সন্ত্রাসী কিছু নাগরিককে শহীদ মিনারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে এই কলংকিত, দুর্গন্ধময়, অপবিত্র শহীদ মিনারকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত। এই শহীদ মিনারে কোনো ভদ্র নাগরিকের আসা উচিত হবে না- মৃত্যুর আগেও নয়, পরেও নয়।
এই শহীদ মিনার এখন আওয়ামী স্বৈরাতন্ত্রের মিনারে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা শহীদ মিনার নয়- এটা আওয়ামী মিনার। এই মিনারকে বর্জন করুন। একটি অনির্বাচনের মাধ্যমে ১৫৪টি আসনে এবং ভ‚য়া নির্বাচনের মাধ্যমে ১৪৬টি আসনে স্বঘোষিত বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ কলংকিত করেছে জাতীয় সংসদ, গণভবন তথা সারা দেশকে।
সুতরাং এই মিনারকে কলংকমুক্ত করতে সক্রিয় হোন। আর সেটা করতে হলে গোটা বাংলাদেশকে আওয়ামী কলংকমুক্ত করতে হবে।
তাই আগামী দিনে দেশে গণতন্ত্র ও ভদ্র সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যোগ দিন। সেই আন্দোলন বেগবান করুন। দুবৃত্তদের চিরবিদায় দেওয়ার প্রচেষ্টায় এগিয়ে আসুন। আর সেটাই হবে সাহসী বাকযোদ্ধা ড. পিয়াস করিমের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানোর সময়োচিত পদক্ষেপ।ধন্যবাদ সবাইকে।
শফিক রেহমান, এই নিবন্ধটি শনিবার দুপুর ১৮.১০.২০১৪ ইং জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তন, ঢাকায়, বাকযোদ্ধা ড. পিয়াস করিম স্মরণসভায় পাঠ করেছেন।