• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

বাংলা একাডেমির উদাসীনতায় ক্ষুদ্ধ প্রকাশকরা


প্রকাশিত: ৯:৩৩ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩০ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রতিবছর একুশে গ্রন্থমেলায় ফাগুনের বৃষ্টিতে প্রকাশকদের স্বপ্ন চুরমার করে দিলেও পদক্ষেপহীন বাংলাএকাডেমি কর্তৃপক্ষ। একাডেমীর এহেন উদাসীনতায় প্রকাশকরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ভিজে যাওয়া বই কে কিনবে? প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি বৃষ্টির কবল থেকে মেলা রক্ষায় কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্থ প্রকাশকরা তাই ক্ষুদ্ধ বাকরুদ্ধ !!

এ সম্পর্কে মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জাতিরকন্ঠ কে এসম্পর্কে প্রেস কনফারেন্স করে জানাবেন বলে জানান। পরে একাডেমির জনসংযোগ অফিসার পিয়াস মজিদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন কথা না বলে ২০ বার ফোন কেটে দেন। এর পর একাডেমির সচিব আব্দুল মান্নান ইলিয়াস এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিকেল ৫টায় জাতিরকন্ঠ কে বলেন, ৩০ মিনিট পর কথা বলবেন। প্রায় এক ঘন্টা পর তিনি বলেন, বৃষ্টি একুশে গ্রন্থমেলার কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত করছে। এক্ষেত্রে একাডেমি খুবই সচেতন। এবারও বৃষ্টি অনেক প্রকাশনার ক্ষতি করেছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এবার সব স্টল ও প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষকে স্ব স্ব উদ্যোগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফাগুনের প্রথম বৃষ্টি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ এর প্রকাশকদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। বসন্ত শুরু হয়েছে মাত্র চারদিন হলো। ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়েছে বৃষ্টি। রবিবার সকাল থেকে কয়েক দফা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে ঢাকায় নামে মুষলধারে বৃষ্টি। সঙ্গে শিলাঝড়’ও । সেই বৃষ্টিতে প্রকাশকদের কষ্টের প্রকাশনা একেকটি বই ভিজে একাকার। নিমেষেই যেনো স্বপ্ন চুরমার। ভিজে যাওয়া শত শত বই নিয়ে ‘বাংলাপ্রকাশ’ কথা বলার ভাষাটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। বাকরুদ্ধ বাংলাপ্রকাশের প্রকাশক ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান।

তারপও বাংলাপ্রকাশের প্রকাশক ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান বললেন, প্রতিবছর একুশে মেলায় প্রকাশকদের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। এবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৩লাখ বর্গফুট জায়গায় চারটি স্তরে মেলার বিস্তার ঘটলেও সবাই বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ।দেখা গেছে, একাডেমি প্রাঙ্গণে এক হাত সমান পানি। পানিতে বই ভিজে বেহাল অবস্থা ২৪টি প্যাভেলিয়ন, ১৫০টি স্টল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৬২০টি ইউনিটসহ ৪৯৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ৭৭০টি ইউনিট স্টল।লিটন ম্যাগাজিন চত্বরের অবস্থা আরো করুণ।প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি বৃষ্টির কবল থেকে মেলা রক্ষায় কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্থ প্রকাশকরা তাই ক্ষুদ্ধ !!

বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ এলাকার আশপাশে পানি জমে আছে। অন্যপাশ থেকে একটু নিচু হওয়ায় এখানকার স্টলগুলোর নিচে প্রবেশ করেছে পানি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মেশিনের সাহয্যে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলা একাডেমির স্টলেও ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি পড়ে নিচে রাখা বইগুলোর অধিকাংশই ভিজে গেছে। রোদে বই শুকানোর কাজ করছেন কর্মীরা।

একাডেমির পুকুর পাড়ে অবস্থিত লেখক কুঞ্জের পাশের স্টলগুলোতে পানি ঢুকেছে বেশি। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা চারপাশে ঝাড়ু দিয়ে বৃষ্টিতে ঝরে পড়া পাতা সরিয়ে নেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে। নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র স্টলের মনির বলেন, ছাদ দিয়ে পানি পড়ে নিচে রাখা সব বই ভিজে গেছে। পানিতে অবস্থা কাহিল।অন্যদিকে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের নিচু এলাকায় জমেছে বৃষ্টির পানি। সেখান থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মেশিনের সাহায়্যে পানি রাস্তার ড্রেনে ফেলার কাজ করে যাচ্ছে। জলছবি প্রকাশনীর কর্মী আশিক বলেন, বৃষ্টিতে আমাদের ২শ’ র বেশি বই ভিজে গেছে। আহমেদ পাবলিশার্স, নালন্দা, জাতীয় প্রকাশ ও বাংলা প্রকাশ স্টলের বই ভিজেছে বেশি।