বাঁশখালীর বিষফোঁড়া নৌকার মোস্তাফিজ
সাংবাদিকদের মারধর ঘুষি ক্যামেরা ভাংচুর
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : আচরণবিধি ভঙ্গ করে নৌকার মাঝি চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের মারধর ঘুষি ও ক্যামেরা ভাংচুর এর মতো গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, আচরণবিধি অনুসরণ না করে পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের মারধর করেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তিনি ও তার সমর্থকরা সাংবাদিকদের ক্যামেরার ট্রাইপড ভাঙচুর করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। পরে মোস্তাফিজ গাড়িতে উঠে চলে যান। মোস্তাফিজুর রহমান বাঁশখালী আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগেও সাংবাদিককে ফোন করে মোস্তাফিজুর রহমানের গালিগালাজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্যে ভিডিও ভাইরাল হওয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, সাংসদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতাকর্মীদের দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিলসহ নানা কারণে তিনি বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন।
এবার মনোনয়ন না পাওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই নৌকা প্রতীক পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান মোস্তাফিজুর রহমান। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার সঙ্গে ঢুকে পড়েন এক ডজন নেতা-কর্মী। মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিন আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাংসদ মোস্তাফিজুর রেগে যান। তিনি রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে হুমকিধমকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরাও এসময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। এতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কিছু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ডিবিসি নিউজের চট্টগ্রাম ব্যুরোর ইনচার্জ মাসুদুল হক দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার রাকিব উদ্দিনকে তেড়ে গিয়ে ঘুষি মারেন। এক পর্যায়ে ক্যামেরা ট্রাইপড ও বুম ভেঙ্গে ফেলেন। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে তার দলীয় কর্মীরা সাংবাদিকদের ওপর তেড়ে যান। এরপর তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এখানে সিসি ক্যামেরা আছে ৷ ক্যামেরায় সব দেখার সুযোগ আছে। কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি ভঙ্গ করে বা কারও সঙ্গে কোনোপ্রকার ঝামেলায় জড়ান, সেটা আমরা দেখব। যাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে আপনারা লিখিত অভিযোগ দেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবে। শুধু সংবাদকর্মী নন, যে কেউ এরকম ঘটনার শিকার হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।