• মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪

বনানীর ধর্ষণকারী চক্রের ‘অাকাম’ কাহিনী ফাঁস


প্রকাশিত: ২:৩৮ পিএম, ১৩ মে ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩২৩ বার

Bap-pola-apon-www.jatirkhantha.com.bd
ডেস্ক রিপোর্টার :  অবশেষে বনানীর চাঞ্চল্যকর ধর্ষণকারী ছেলের পক্ষে মুখ খুললেন আপন 33জুয়েলার্সের মালিক দিলদার হোসেন সেলিম।ওদিকে তার সাবেক পুত্রবধূ পিয়াস ফাঁস করে দিয়েছেন-বাপ পোলার ‌‌‌’অাকাম’ কাহিনী।

বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণকারী ছেলের পক্ষে তিনি বলেন, আমার ছেলে যদি হোটেলে ওগো লগে কিছু কইরা থাকে তো মিলমিশ কইরা করছে। এরপরও বলেন, পোলা একটু-আধটু তো এসব করবই। আমিও তো করি। আমার যৌবন কি শেষ হয়ে গেছে?

আমি এখনও বুড়া হইনি।’ ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর ছেলের অপকর্মে সমর্থন দিয়ে এসব কথা বলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। আপন জুয়েলার্সের অফিসে এসব কথা বলেন তিনি।

ধর্ষণ মামলা নিয়ে ক্ষুব্ধ সেলিম বলেন, আরে ভাই এমন ফালতু বিষয় নিয়ে হৈচৈ করার কি আছে? মানছি আমার ছেলে আকাম করছে। কিন্তু ওই দুইটা মেয়েও তো ভালো না। খারাপ মেয়ে। তা না হলে কেউ গভীর রাতে হোটেলে যায়? ভদ্রঘরের কোনো মেয়ে কি রাত-বিরাতে হোটেলে যাবে?

ধর্ষণ মামলা সম্পর্কে সেলিম বলেন, যে মেয়ে নিজের ইচ্ছায় হোটেলে গিয়েছে তাকে ধর্ষণ করতে হবে কেন? আসলে ওরা (ধর্ষিত দুই তরুণী) মনে করছে বড় লোকের ছেলেরে পাইছি। এগুলোরে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসাইতে পারলে কিছু টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে।

সেলিম বলেন, পুরোপুরি প্ল্যানিং করে ওরা এটা করেছে। আমার সাবেক পুত্রবধূ ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাও ওদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। সেলিম বলেন, ‘আমিও তো অনেক জায়গায় আকাম করি। করুম না কেন। আমি কি বুড়া হইয়া গেছি নাকি? আমার যৌবন নাই? আমিও তো হোটেলে যাই। আমার ছেলে যদি হোটেলে ওগো লগে কিছু কইরা থাকে তো মিলমিশ কইরা করছে। ধর্ষণ করতে যাইব ক্যান?’

ঘটনার পুরো দায় পিয়াসার ওপর চাপিয়ে তিনি বলেন, পিয়াসা যে এসব করছে তার প্রমাণও তার কাছে আছে। কথাবার্তার ফাঁকে নিজের মোবাইল ফোন থেকে তিনি কয়েকটি মেসেজ দেখিয়ে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর পিয়াসা আমার কাছে এসব দিয়েছে। ওই বাজে মেয়ে (পিয়াসা) মনে করছে আমরা বিপদে পড়েছি। এখন সে যা বলবে তাই করব।

সেলিম বলেন, পিয়াসা প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার ছেলেকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু তার সম্পর্কে জানার পর আমার ছেলে তাকে তালাক দিয়েছে। তালাকের পর থেকেই ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ক্ষতি করার জন্য সে আমার পরিবারের পেছনে লেগেছে।

সেলিমের এমন বেফাঁস মন্তব্য’র পর পুত্রবধূ পিয়াসা তার সকল আকাম অাঁস করেছেন। এ সম্পর্কে ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা বলেন, ‘দিলদার আহমেদ সেলিম একটা প্রথম সারির লম্পট। এখন তার ৫৪ বছর বয়স। কিন্তু নারী লিপ্সা থেকে তিনি পিছু হটছেন না। এক প্রশ্নের উত্তরে পিয়াসা বলেন, মূলত তার লাম্পট্যের কারণেই সাফাত নষ্ট হয়েছে। বাপ হয়ে ছেলের চরিত্র নষ্ট করেছেন তিনি।’

পিয়াসা বলেন, ‘কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন দিলদার আসলে কেমন চরিত্রের মানুষ।’ তিনি জানান, ‘আমি তখন ওই বাড়ির বউ। একদিন ফোন এলো সাফাতের বাবাকে গুলশানের একটি পাঁচতারকা হোটেলের কর্মচারীরা মারধর করছে। একথা শুনে সাফাত হোটেলে যায়। গিয়ে দেখে ঘটনা ভিন্ন। মদপান করে মাতাল অবস্থায় এক নারীকে তুলে নিতে চাইছিলেন সেলিম। এ নিয়ে হোটেল কর্মচারীদের সঙ্গে তার তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে হোটেলে আটকে রাখে। পরে সাফাত ক্ষমা চেয়ে তার বাবাকে ছাড়িয়ে আনে।

দিলদার হোসেনের বন্ধু-বান্ধবদের বলেন, সেলিমের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হলেন ডা. দৌলা ও জনৈক রাজনৈতিক নেতা। এদের মধ্যে ডা. দৌলা যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন। পরে সেলিমই প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে তার জামিনের ব্যবস্থা করেন। আর রাজনৈতিক দলের জনৈক নেতা একাধিক হত্যা মামলার আসামি। অভিযোগ আছে, তাকে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পাঁচতারকা হোটেলে মদপান করেন তিনি।

মদ ও নারী ছাড়া সেলিমের চলে না। সন্ধ্যার পর গুলশানের কোনো না কোনো বারে তাকে পাওয়া যাবেই। তবে নির্ধারিত একটি হোটেলের বারে নিয়মিত মদপান করেন তিনি। একদিন মাতাল হয়ে বারের এক ক্যাবারে ড্যান্সারকে তার ভালো লেগে যায়। এ নিয়ে হোটেলে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে।

পিয়াসা বলেন, সেলিমের নারী বন্ধু’র তালিকা অনেক বড়। উনার যে কতগুলো গার্লফ্রেন্ড আছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। পার্টিতে এলেই তিনি সুন্দরী মেয়ে খুঁজতেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেল কর্মকর্তা শাহরিয়ার শেখের সঙ্গে সেলিমের দহরম-মহরম। হোটেলে রুম বুক থেকে শুরু করে মদ ও নারী সরবরাহের কাজটা করেন এ শাহরিয়ার।

তিনি বলেন, দিলদার হোসেন সেলিম শূন্য থেকে কোটিপতি। প্রায় সব সময়ই সে মাতাল অবস্থায় থাকে। এছাড়া তার আশপাশে অপরাধী ও স্মাগলারদের ঘোরাফেরা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এত টাকা-পয়সা থাকলেও পারিবারিকভাবে সেলিম সাহেব সুখী নন। প্রতিদিন তিনি মাতাল অবস্থায় বাসায় ফেরেন।

তার মাতলামির কথা বলে শেষ করা যাবে না। এসব কারণে বড় ছেলে তো নষ্ট হয়েছেই, এখন ছোট ছেলে ইফাতও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছেলের বন্ধু হলেও নাঈমকে (দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে হালিম) দিয়ে তিনি শোবিজের উঠতি মডেলদের ভাড়া করতেন।

অনেক মডেলকে নিয়ে তিনি থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরেও গেছেন। বাবাকে দেখে তার ছেলেও এসবই শিখেছে। সাফাতও আপন জুয়েলার্সের মডেলদের নিয়ে বিদেশে যাওয়া শুরু করেছে। কিছুদিন আগে সে একজন আলোচিত মডেল নিয়ে ভারতে যায়।