বনানীর ধর্ষক ধনীর দুলালরা পাকরাও হলো সিলেটে
সিলেট থেকে রিমন বিশ্বাস : অবশেষে বনানীর দুই ধর্ষক পাকরাও হলো সিলেটে।পুলিশ জানায়, রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদকে সিলেটের জালালাবাদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘আপন জুয়েলার্সের’ মালিকের ছেলে সাফাতের সঙ্গে মামলার আরেক আসামি সাদমান সাকিফও গ্রেফতার হয়েছেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) একেএম শহীদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জালালাবাদ এলাকার একটি বাড়ি থেকে পুলিশ সদরদফতরের একটি বিশেষ দল সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদেরকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
সাফাত (২৬) ‘আপন জুয়েলার্সের’ মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে এবং সাদমান (২৪) ‘পিকাসো রেস্তোরাঁর’ অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে। দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের এই মামলায় সাফাতের আরেক বন্ধু নাঈম আশরাফ (প্রকৃত নাম আবদুল হালিম) এবং তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ ও গাড়িচালক বিল্লালও আসামি।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ঘটনার ৪০ দিন পর ভুক্তভোগী ওই দুই ছাত্রী গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘রেইনট্রি হোটেলে’ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে দুজনকে ধর্ষণ করেন সাফাত ও নাঈম। সাদমানসহ অন্য তিনজন ছিলেন সহযোগী।
দুই ছাত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেওয়া হয়। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের ওই হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন।
আদালতে জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর সাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তারা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। সেখানে তারা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ তারা চলে আসতে চেয়েছিলেন।
তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন ও তাকে মারধর করেন। এরপর তাদেরকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া যায়। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম আশরাফ মারধর করেন। তারা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানান।
দুই তরুণী জানান, আসামিরা ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তাদের কথামতো না চললে কিংবা ২৮ মার্চের ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রথমে থানা-পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে। আসামি ও তাদের পরিবার ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।