• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বক্তার খানের পিয়াজদানা’য় সাফল্য’র নেপথ্যে


প্রকাশিত: ১১:৫৯ এএম, ৮ মার্চ ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৫ বার

baktar khan-www.jatiekhantha.com.bd

ফরিদপুর থেকে ইমরুল কায়েস  :  এ বছর ফরিদপুর জেলা থেকে আড়াই শ কোটি টাকার পিয়াজদানা বিক্রি হবে। এর প্রধানতম মালিক বক্তার খান। তিনি পিয়াজদানা আবাদ করেই এখন স্বাবলম্বি হয়েছেন। শুধু স্বাবলম্বি নন তাঁর অনুপ্রেরণায় অনেকেই ঝুঁকছেন এই আবাদে।

দেখা গেছে, পিয়াজদানা আবাদ করে সারা দেশে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অম্বিকাপুরের আদর্শ কৃষক বক্তার খান। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩০ একর জমিতে পিয়াজদানা লাগিয়েছেন। তার দেখাদেখি ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এ ফসলটির দিকে ঝুঁকছে কৃষক।

বক্তার খানের পিয়াজদানার খেত পরিদর্শন করতে বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষি কর্মকর্তা, কৃষকরা আসছেন। পিয়াজদানা চাষে সাফল্য পেতে তারা বক্তার খানের পরামর্শ নিচ্ছেন। ফলে ফরিদপুরের কৃষি ব্র্যান্ড হিসেবে ‘পিয়াজদানা’ তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে। পিয়াজদানা একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল ফসল হিসেবে পরিচিত। প্রথম দিকে পিয়াজদানা আবাদ করে বেশ বিপদেই পড়েছিলেন বক্তার খান।

১৫ বছর আগে ৩০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পিয়াজদানার আবাদ করেন। অনেকেই তাকে এ ফসল আবাদ না করার পরামর্শ দেন। তিনি তাদের কথায় কান দেননি। প্রতি বছর বাড়াতে থাকেন জমির পরিধি। সিডরের সময় লোকসানের মধ্যে পড়তে হয়। সে বছর তার ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ব্যাংক থেকে ঋণ ও ধারদেনা করে পুনরায় শুরু করেন দানার আবাদ। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

কয়েক বছর ধরে বক্তার খান দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পিয়াজদানার আবাদকারী চাষি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। এ বছর তিনি ৩০ একর জমিতে পিয়াজদানার আবাদ করেছেন। বক্তার খান জানান, বিদেশ থেকে যাতে আর পিয়াজ আমদানি করতে না হয় সেজন্যই তিনি এ ফসলটি আবাদে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। তার খেতের পিয়াজদানা এখন দেশের সেরা দানা হিসেবে বিবেচিত। তিন বছর আগে থেকে বক্তার খান ‘খান সিড’ নামে পিয়াজদানা বাজারজাত করে আসছেন।

বর্তমানে তার পিয়াজদানা যাচ্ছে পাবনা, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ঝিনাইদহ, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, কুমিল্লা, সিলেট, রাজশাহীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। বক্তার খান জানান, এটি আবাদ করতে প্রচুর টাকার দরকার হয়। বপন থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার পরও পিয়াজদানা প্রতিটি স্তরে পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হয়। ১ একর জমিতে খরচ হয় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা।

অনেক বেকার যুবককে তিনি দানা চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন। তার অনুপ্রেরণায় ৪০ জন বেকার যুবক দানা আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বক্তার খান জানান, ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে কৃষক ও বর্গাচাষিদের ঋণ দিলে এ ফসলটি আবাদে কৃষক উৎসাহিত হবে। পিয়াজদানা চাষিদের নিয়ে বিএডিসির ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ পুনরায় চালুর পাশাপাশি পিয়াজ রাখার জন্য একটি হিমাগার, বিএডিসি কর্তৃক ন্যায্যমূল্য প্রদানের দাবি জানান তিনি।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ফরিদপুর জেলা থেকে আড়াই শ কোটি টাকার পিয়াজদানা বিক্রি হবে; যা জেলায় মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।