ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়:উপদেষ্টা আসিফ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হচ্ছে গণভবন –
বিশেষ প্রতিনিধি : যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটা ছিল বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের পঞ্চম বৈঠক। পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তির দিনে এই ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, এই প্রশ্ন জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তবে পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ভাবছি সেটাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। সেটি এখনো বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে আমরা অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। সম্পূর্ণভাবে বিচারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
দলের বিচারের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, বিচারের (ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনা) বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। কীভাবে বিচার হবে, সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত একটি রূপরেখা প্রকাশ করবে।দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কার্যক্রম চালাতে পারবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রশ্নটি দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। যেহেতু আওয়ামী লীগ একটি গণহত্যা ঘটিয়েছে এ দেশে, সেই গণহত্যার দায় নিয়ে তারা কীভাবে ফিরবে বা তাদের ফিরতে দেওয়া হবে কি না, এটি দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। এটি জনগণের সিদ্ধান্ত।
আর গণভবন হবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গণভবন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে, তার সবকিছু সংরক্ষণ করার জন্য এটাকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।
দ্রুতই এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হবে, জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গণভবন যে অবস্থায় আছে, জনগণ যেভাবে রেখেছে, সে অবস্থায় রাখা হবে। এর মধ্যে ভেতরে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। যাতে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। এ বিষয়ে আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।বিভিন্ন জায়গার অভিজ্ঞতা নিয়ে এই জাদুঘর করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণপূর্ত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজটি সম্পন্ন করবে।