জাফরুল্লাহ’র নীলনক্সা ফাঁস-
ডেস্ক রিপোর্টার : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আরেকটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মতুর্জা আলীর সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের ওই অডিও এখন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক নানা ঘটনা উঠে এসেছে। ফোনালাপের কিছু অংশ এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো…
মীর মুর্তজা আলী : হ্যালো, হ্যাঁ বড় ভাই
ডা. জাফরুল্লাহ : হ্যাঁ বাবু
মীর মুর্তজা আলী : জ্বি
ডা. জাফরুল্লাহ :… ফোন করতে বলো আমাকে।
মীর মুর্তজা আলী : আচ্ছা ঠিক আছে।
ডা. জাফরুল্লাহ : আর কী অবস্থা, তোমাদের ওইদিকে?
মীর মুর্তজা আলী : আমরা পিএইচএ ছিলাম। এইমাত্র আসলাম ক্যান্টিনে খেতে।
ডা. জাফরুল্লাহ : ২০টা করে ছাত্র রাখো। ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করো। এখন অ্যাগ্রেসিভ হও। কথা বুচ্ছো? না হলে বদমাইশিদের থামাইতে পারবা না।
মীর মুর্তজা আলী : না, আমি তো তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে।
ডা. জাফরুল্লাহ : ভালো করছো। এ ছাড়া কোনো পথ নাই আমাদের। এ সমস্ত বুঝতেই পারো? দেখ না, আমি কালকে কিভাবে, তুমি ছিলা কালকে?
মীর মুর্তজা আলী : না, কাল আপনি তো আমারে বকাবাজি করলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ : ও না, তুমি তো কাল ওখানেই ছিলা। তুমি দেখছো না, আমি র্যাবের…। সবাই যখন… পড়তাছে। ফোরর্থফুলি এ করতে হবে। এদের কন্সপিরেসি থামাতে হলে, ও যদি এককদম বাড়ে, আমাকে দুকদম বাড়তে হবে।
মীর মুর্তজা আলী : না, আজকে যেটা টার্গেট ছিল। ওই কটন টেক্সটাইলের হুজুর, এক দাড়িওয়ালা। ওই সেদিনকা ঝামেলা করছে, সেই আজকে মার খাইছে। মেয়েরাই মারছে তারে।
ডা. জাফরুল্লাহ : তবে ওর নামে একটা মামলা করা…?
মীর মুর্তজা আলী : জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভারসিটি ৩টার সময় একটা এ্যা আছে। মানববন্ধন করবে নিপীড়ন বিরোধী জোট।
ডা. জাফরুল্লাহ : আচ্ছা বেশ ভালো।
মীর মুর্তজা আলী : আমাদের ছেলেমেয়েরা যাবে ওখানে। একগাড়ি যাবে।
ডা. জাফরুল্লাহ : ওইটাই ভালো। জাহাঙ্গীরনগরকে ইনভল্ব করতে পারলে অনেক বেশি লাভ হতো।
মীর মুর্তজা আলী : নিপীড়ন বিরোধী নাসিম অঞ্জন ছিলেন না আমাদের এক সময়? ওনারাই করবেন অর্গানাইজেশন।
ডা. জাফরুল্লাহ : নাসিম, হ্যাঁ ভালো। ওইটা না করলে তো এ্যা হবে না, অ্যাগ্রেসিভ কোনো একটা যে। প্রত্যেকটা অ্যাকে ১০টা করে ছাত্র রাখো, ২০টা করে ছাত্র রাখো।
মীর মুর্তজা আলী : এখন ৫০টা করে ছাত্রের লিস্ট করা হয়েছে।
ডা. জাফরুল্লাহ : একবারে লিস্ট করে তারা থাকবে, খাবে-দাবে।
মীর মুর্তজা আলী : বিদেশিরা আসছে না? পুলিশকে বলছি, আমাদের বিদেশিরা আসছে, তাদের দায়িত্ব আপনাদের, এদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
ডা. জাফরুল্লাহ : কিন্তু দুইজন নাকি চলে আইছে, ইন্ডিয়া নাকি কোথা থেকে আসছে।
মীর মুর্তজা আলী: না, আমি তো জানি না।
ডা. জাফরুল্লাহ : ওরা ফিরে আসছে কেন? একটু খোঁজ নাও তো। আমাকে খোঁজ নিয়ে জানাও। আমাদের পাঁচ হাজার ছাত্রই আছে। তাদেরকে ৫০ জনকে আমরা যদি ইনভল্ব করি। মারপিটের জন্য ৫০ জনের বেশি লোক লাগে না। মুভ করাও। এত ভয় পেও না। সবাই মিলে মুভ কর।
দেলোয়ার, চেয়ারম্যানের পক্ষে নাকি তার মন খারাপ, তাদের আসামি করে দিছি দেখ্যা।
মীর মুর্তজা আলী : তা আমি জানি না।
ডা. জাফরুল্লাহ : সেটা আমি তো সবি শুনতেছি।
মীর মুর্তজা আলী : না, ওইটা হইছে কী। যেটা আমার মনে হয়, দেলোয়ার ভাই যেটা বলছিল, সেটা হচ্ছে, তিনটা মামলা তিন গ্রুপ করলে পারে একটা ওরা ইউনিটি হয়ে গেছে এখন। কিন্তু আলাদা আলাদা করলে সুবিধা হতো। যেমন…তিনটা মামলা করলে সুবিধা হতো বড় ভাই।
ডা. জাফরুল্লাহ : সেটা তখন বুদ্ধি দাওনাই কেন?
মীর মুর্তজা আলী : আমিতো দেলোয়ার ভাইকে গ্রাফ করে দিয়েছিলাম।
ডা. জাফরুল্লাহ : এখন আরও দুইটা মামলা করো, নারী নির্যাতন করো একটা। এখন… আমাদের দুইটা মেয়েকে দিয়ে করাইয়া দাও। কথা বুঝচ্ছো? আমাদের দুইটা মেয়েকে দিয়ে নারী নির্যাতনের। তুমি যাও, যাইয়া বসে দুইটা নারী নির্যাতনের কেস করাইয়া দাও।
মীর মুর্তজা আলী : আমি ড্রাফ করে দিয়া আসছি।
ডা. জাফরুল্লাহ : ওইটা দেখ….।
এর আগে ডা. জাফরুল্লাহর সঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারাবন্দী উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়।