প্রধানমন্ত্রীর ভালবাসায় উচ্ছ্বসিত ছাত্রলীগ
বিশেষ প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাছে আবেগে উচ্ছ্বসিত ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকালের পুনর্মিলনী এবং
আজ বুধবার গণভবনে মতবিনিময় সভায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খুবই খুশি ও আনন্দে উদ্বেলিত হতে দেখা যায়। মঙ্গলবারের পুর্নমিলনীর পর আজ সকালে গণভবনে সংগঠনের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপ্যায়ন করেন ছাত্রলীগের আজীবন সদস্য জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা।
গণভবনের সামনের মাঠে এদিন বেলা ১১টার পর প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে এসে পৌঁছলে ছাত্রলীগের নেতারা তাকে করতালির মধ্যে স্বাগত জানান। এসময় শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গণভবন প্রাঙ্গণ। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন। পরিচয় পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতেই ছাত্রলীগ নেতাদের গণভবনে আসায় গণভবন ধন্য হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিটি নেতা-কর্মীকে এ বাগানের ফুল হিসেবে উল্লেখ করেন।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের জন্য গণভবনে দুপুরে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে বলে সবাইকে খাবারের আমন্ত্রণ জানান তিনি। এসময় ছাত্র রাজনীতি অবস্থায় বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি, ঢাবি’র বেগম রোকেয়া হল ছাত্রলীগের জিএস ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সদস্য হলেও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বক্তব্যের শুরুতে বিভিন্ন জেলা ইউনিটের ছাত্রলীগ নেতাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানানোয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি জানান, গণভবনে আমন্ত্রণ পাওয়ার খবর পেয়ে জেলা ইউনিটের নেতা-কর্মীরা খুবই খুশি ও আনন্দে উদ্বেলিত।
সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন একে একে জেলা ইউনিটগুলোর নাম বললে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা দাঁড়িয়ে মাইক হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম দেন। প্রধানমন্ত্রীও তাদের সালামের জবাব দেন। শুরুতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু মাইক হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান।
এ সময় রুনু আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আপা আপনি আমাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আপনার সঙ্গে কথা বলতে পেরে আজ আমরা ধন্য। আপনার ভালোবাসায় আমরা মুগ্ধ। আমাদের রাজনীতিক জীবন ধন্য। আপনি দোয়া করবেন, আমরা যেন সংগঠনের নীতি ও আদর্শ ঠিক রেখে চলতে পারি। এরপর সভাপতি গোলাম কিবরিয়াও নিজের পরিচয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে গাহর্স্থ্য অর্থনীতি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচিত হোন। এসময় কলেজের সভাপতি জেসমিন আরা রুমাসহ তিন জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজের জন্মদিনের কথা বললে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। একে একে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ, কবি নজরুল সরকারী কলেজ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলার নেতারা তাদের পরিচয় দেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পরিচয় পর্বে সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জবিতে হল নির্মাণের অনুরোধ জানালে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুরান ঢাকায় আর থাকবে না। কেরানীগঞ্জে সুন্দর জায়গায় বড় ক্যাম্পাস করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাওসার সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জনি সুশীল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারায় নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, ”বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডেকে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, আমরা ওঁনার সঙ্গে কথা বলতে পারায় খুবই আনন্দিত। ” রাজনীতির সেরা সময় উল্লেখ করেন তারা।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ইমু নিজের পরিচয় তুলে ধরে বলেন, ”মাননীয় নেত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরের বাইরে এই প্রথম আপনি আমাদের সঙ্গে কথা বলায় আমরা খুবই আনন্দিত। আপনি মমতাময়ী নেত্রী, আপনি নিয়মিতই আমাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। আমরা ধন্য। ”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
এদিকে মঙ্গলবার পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি চৈতালি হালদার চৈতীকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করায় বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চৈতী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ আমার জীবন সার্থক, আমি ধন্য, আমার সারাজীবন এর সকল শ্রম, স্বপ্ন, সাধনা আজ পূর্ণ…। ছোটবেলা থেকে যার ছবি দেখে বড় হয়েছি, যার আদর্শকে বুকে লালন করেছি, আজ তিনি আমায় তার বুকে পরম মমতায় আশ্রয় দিয়েছেন…এ আমার পরম পাওয়া…। আমি আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, দেশরত্নের নির্দেশিত পথে নিজেকে উত্সর্গ করব। ’
অন্যদিকে, পুর্নমিলনী সফল হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ”জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য ও সাফল্যের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি যাদের পদচারনায় মুখরিত হয়েছে তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লক্ষ লক্ষ নেতা কর্মীর প্রাণের স্পন্দন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আজীবন সদস্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি। আরো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সাবেক নেতৃবৃন্দের প্রতি যাদের উপস্থিতি এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে আরো বেশি গৌরবান্বিত ও সাফল্যমণ্ডিত করেছে।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দকে যারা বিভিন্ন উপকমিটিতে সার্বিকভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে মূলত অনুষ্ঠানকে সফল করেছে। আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আগামীতেও আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যেকোনো নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারবো বলে বিশ্বাস রাখি। ”
আর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন গতকাল রাতে তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্নী শেখ হাসিনা আজ মঞ্চে উঠে প্রথমেই জানতে চাইলেন- ‘আমার মানিক-জোড়’ সবাই আছে তো!