• রোববার , ২৪ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ হত্যায় মুরাদ ধরা-চট্টগ্রাম থেকে পাকড়াও


প্রকাশিত: ৬:৫৪ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২৩ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। সোমবার (২৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে র‌্যাব-৭-এর একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করেন। ওই মামলার ১৬৩ নম্বর এজাহার নামীয় আসামি তিনি। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্ব সরফভাটা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।তিনি বলেন, কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার ১৬৩ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন-মনোবল ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশের ওপর এই নৃশংস হামলায় তিনি অংশ নেন। গ্রেপ্তার মুরাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানা ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বেআইনি সমাবেশ, নাশকতা, হত্যাচেষ্টাসহ দুইটি মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-৭ সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে মহাসমাবেশ স্থলে অবস্থান নেয়।কাকরাইলের সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে নয়াপল্টন বিএনপি পার্টি অফিস সংলগ্ন ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়।

অগ্রসরমান দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায় এবং অপর অংশটি ছাত্রদল নেতা আমান এবং জাকির হোসেন জসিম নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের অপর প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়। রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পর ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপরে অতর্কিত হামলা করে। হামলায় পশ্চিম প্রান্তে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে অপর প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়।

পশ্চিম দিকে অগ্রসরমান পুলিশ সদস্যদের ওপর ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে যায়। এ সময় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকে। উপর্যপুরি আঘাতের ফলে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তার নিথর দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে।

পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কনস্টেবল পারভেজের নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে। আঘাতের একপর্যায়ে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত করে ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী তাদের অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৬৭ জনকে আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।