পুরো বিল্ডিংয়ে এক্সপ্লোসিভ বিছানো- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান
সিলেট থেকে মাসুদার রহমান : সিলেটে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান সম্পর্কে আজ শনিবার রাতে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান এক প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পুরো বিল্ডিংয়ে এক্সপ্লোসিভ বিছানোর মত অবস্থা রয়েছে। সেখানে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে বলে সময় লাগছে।
সিলেটের শিববাড়ি এলাকায় ‘আতিয়া মহল’ নামের বাড়িতে সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো দলের অভিযান চলছে। সেখান থেকে গুলি ও বোমার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে সেখান থেকে ৭৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অভিযানে অবরুদ্ধদের উদ্ধারে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। এতে সেনাবাহিনী সফল হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুও রয়েছে। এখানে ৩০ জন পুরুষ, ২১ জন নারী ও ২৭ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসানের ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত এখানে তুলে ধরা হলো :
‘সব থেকে বড় কথা ছিল ভেতরে অনেক বেশি অস্থির ছিল এবং সেটার জন্য তাঁরা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) অপারেশনটা করার মতো আগায়নি। তখন তাঁরা সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছে এবং
গতকালকে সন্ধ্যার পরে রাত্রে ৮-৯টার দিকে আমাদেরকে বলা হয়েছে যে সেনাবাহিনীকে অপারেশনটা করার জন্য এবং তার পরের থেকে আমাদের এখানে ১৭টা পদাতিক ডিভিশন আছে, তার অধীনে প্রথম প্যারাকমান্ড ব্যাটালিয়ন আছে। তারা এসে মূলত অপারেশনাল যে প্লানিং যেগুলো সেগুলো গতকাল রাত্রে সেগুলো করেছে।
‘এবং আজকে সকাল থেকে আনুমানিক সাড়ে ৭-৮টার দিকে রওনা রয়েছে এবং ৯টার দিকে অপারেশন শুরু হয়েছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিল্ডিংয়ে জিম্মি যারা আছে তাদেরকে নিরাপদে উদ্ধার করা। সেটা করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল এবং আল্লাহর রহমতে আমরা যে কয়জন পুরো ৭৮ জনকেই একদম নিরাপদে বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।
‘আমাদের এখানে এ পর্যন্ত ৩০ জন পুরুষ, ২৭ জন মহিলা এবং ২১ জন শিশুকে নিরাপদে নিয়ে এসেছি এবং তাদের সঙ্গে আপনারা এখনই কথা বলার সুযোগ পাবেন।‘সেটা ছিল আমাদের প্রাইম লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যটা আমরা খুব সফলতার সঙ্গে আল্লাহর রহমতে সক্ষম করতে পেরেছি।
এর পরে আমরা দেখলাম যে, পুরো পাঁচতলা বিল্ডিংয়ে প্রায় ৩০টা ফ্ল্যাট এবং দেড়শর কাছাকাছি রুম আছে। এর অনেক রুম, সিঁড়িঘর আনাচে-কানাচে তাঁরা আইইডি দিয়ে পুরো বিল্ডিংটাকে এক্সপ্লোসিভ দিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে। যার দরুন পুরো অপারেশনটা অনেক কেয়ারফুলি করতে হচ্ছে, এর জন্য অনেক সময় লাগছে।
‘আজকে এ পর্যন্ত যা অপারেশন হয়েছে, তাতে মূলত হোস্টেজ রেসকিউটা ছিল আমাদের মেইন কাজ এবং সেটা আমরা সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি। তবে জঙ্গি ভেতরে এখনো আছে, আইইডিও সব লাগানো আছে। আমরা যেহেতু অনেক কেয়ারফুলি যাচ্ছি, রুমে একটা একটা করে ক্লিয়ার করে এগুতে হচ্ছে, যার কারণে সময় লাগছে। একজ্যাক্টলি অপারেশনটা কখন শেষ হবে সেটা আমরা এখনি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে বলতে পারছি না।’