• বুধবার , ২৭ নভেম্বর ২০২৪

পাল্টাপাল্টি হুংকারে কাদের-ফখরুল


প্রকাশিত: ১২:১৯ এএম, ২৯ জুলাই ২৩ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৭ বার

বিশেষ প্রতিনিধি : ক্ষমতাসীন দলের শান্তির সমাবেশের বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যদি নিজেদের ভালো চান, এখনো সময় আছে। আমাদের এক দফা দাবি, সেটা মেনে নিন আর পদত্যাগ করুন।

অন্যদিকে পাল্টা হুংকারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এত দুঃসাহস তাঁরা পেলেন কোথায়? তারেক রহমান এত টাকা পেলেন কোথা থেকে যে আমেরিকার কিছু কংগ্রেসম্যানকে টাকা দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নামিয়েছেন? গণভবন থেকে হটাবেন, এত সোজা; আমরা চেয়ে চেয়ে ললিপপ খাব? আগুন নিয়ে আসবেন, পুড়িয়ে
দেব হাত। ভাঙচুর করতে আসবেন,হাত ভেঙে দেব-চোখ রাঙাবেন না’

তারেক এত টাকা কোথায় পেল -কাদের

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির এক দফা আন্দোলন নয়াপল্টনের কাদাপানিতে আটকে গেছে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারেক রহমান এত টাকা পেলেন কোথায়? আমেরিকার কিছু কংগ্রেসম্যানকে টাকা দেওয়া; লবিস্ট নিয়োগ করে টাকা দিয়ে কিছু লোককে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের কাছে চিঠি লেখেন যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন করতে হবে।

এ দুঃসাহস তাঁরা পেলেন কোথায়? ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির এক দফা খাদে পড়ে গেছে। এই এক দফা কোনো দিন বিএনপির ক্ষমতার স্বাদ পূরণ করতে পারবে না।আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন—যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদাপানিতে আটকে গেছে। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ফরমাশ দিচ্ছেন, এদিকে ফখরুল-আমীর খসরুরা লাফালাফি করছেন। জাতিসংঘ নাকি নির্বাচন তত্ত্বাবধান করবে। গণভবন নাকি ছেড়ে দিতে হবে। জনগণ শেখ হাসিনাকে গণভবনে বসিয়েছেন। যত দিন জনগণ চাইবেন, তত দিন শেখ হাসিনা গণভবনে থাকবেন। তারেক জিয়া কিছুই করতে পারবেন না।যেদিকে তাকাই, মানুষ আর মানুষ’, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না। আমরা সংঘাতের জন্য এই সমাবেশ করছি না। আমরা জনগণের সম্পত্তি, জানমাল পাহারা দিতে এসেছি।

বিএনপি এখন নাকি ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান নেবে—এ কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা রাস্তা বন্ধ করবে। আপনাদের (বিএনপি) চলার রাস্তাও বন্ধ করে দেব।’ আজকের ঢাকা তরুণ কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণভবন থেকে হটাবে, এত সোজা; আমরা চেয়ে চেয়ে ললিপপ খাব? আগুন নিয়ে আসবেন, পুড়িয়ে দেব হাত। ভাঙচুর করতে আসবেন, হাত ভেঙে দেব।’ তিনি বলেন, ‘চোখ রাঙাবেন না। দেশি-বিদেশি যাঁরাই আজ চোখ রাঙাচ্ছেন, তাঁদের বলে দিতে চাই, আমাদের শিকড় এ মাটির অনেক গভীরে।’

ফুলের ভেতরেও বিষধর সাপ থাকে, মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমান এত টাকা পেলেন কোথায়? আমেরিকার কিছু কংগ্রেসম্যানকে টাকা দেওয়া; লবিস্ট নিয়োগ করে টাকা দিয়ে কিছু লোককে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের কাছে চিঠি লেখেন যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন করতে হবে। এ দুঃসাহস তাঁরা পেলেন কোথায়?

কারা কারা ঘন ঘন লন্ডনে যাচ্ছেন, তারেক রহমানের হাতে ডলার তুলে দিচ্ছেন, তা আওয়ামী লীগ জানে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এমপি হবেন, মনোনয়ন-বাণিজ্য করবেন, টাকা দিচ্ছেন। সে (তারেক রহমান) নিজে কোনো দিন আসতে পারবে, তার কোনো গ্যারান্টি আছে?প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাতে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমান না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের কথা চিন্তা করে রাতে পর্যন্ত তাঁর ঘুম হারাম হয়ে যায়। সেই নেত্রী কিছুদিন ধরে বাইরে যাচ্ছেন। কেন? দেশ ভ্রমণ করতে যাননি, গিয়েছেন দেশের জনগণকে বাঁচাতে, দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে।

সমাবেশে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষে যৌথ ঘোষণা পাঠ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে মেতে উঠেছে। নীলনকশা বাস্তবায়নে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে তৎপর রয়েছে। এই অবস্থায় দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করতে পাঁচ দফা প্রত্যয় ঘোষণা করা হচ্ছে। এগুলো হলো, ‘এক, আগুন–সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য প্রতিহত করব। দুই, দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াব। তিন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা সোচ্চার থাকব। চার, শেখ হাসিনার উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা কাজ করব এবং পাঁচ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়তে নিয়োজিত থাকব।

বিএনপির হুংকার-এখনও সময় আছে

স্টাফ রিপোর্টার : আবারও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি নিজেদের ভালো চান, এখনো সময় আছে। আমাদের এক দফা দাবি, সেটা মেনে নিন আর পদত্যাগ করুন। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ আজ জেগে উঠেছে। যদি পদত্যাগ না করেন, এ দেশের মানুষ আপনাদের পতন করেই ছাড়বে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশ করে বিএনপি।

মহাসমাবেশ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আগামীকাল শনিবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখগুলোয় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির মহাসমাবেশ শেষ হয়।বিএনপির মহাসচিব বলেন, সারা দেশ থেকে গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুবসমাজ, নারী, প্রবীণ মানুষ আজকের এ মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়েছে। এই মহাসমাবেশ বাংলাদেশের পরিবর্তনের মাইলফলক।

প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে বেআইনিভাবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। সংবিধান অনুযায়ী, আইনের শাসন মেনে কাজ করেন। গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ করুন, কারাগারে যাঁদের আটক রেখেছেন, তাঁদের মুক্তি দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের হয়ে যিনি আন্দোলন–সংগ্রাম করেন, সেই তারেক রহমানকে বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে, অত্যাচার করে এ দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছে।

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, এই বেআইনি, অসাংবিধানিক, ভোট চোর আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে বোকা বানিয়ে বারবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। তারা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চায়। তিনি আরও বলেন, এই গণবিরোধী, অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন না। এ জন্য মানুষ ভোটেও অংশগ্রহণ করেন না। জনগণের এখন নির্বাচনব্যবস্থার ওপর কোনো আস্থা নেই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে শরিক ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একমত হয়েছি যে এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, তাদের অধীনে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, দফা এক, দাবি এক—এই সরকারের পদত্যাগ।’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রযন্ত্র—সবকিছুকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এ দেশের জনগণ আর এটা মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, আমরা একা নই, আন্তর্জাতিক বিশ্বও দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।মহাসমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা থেকে শুরু করে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থকেরা অংশগ্রহণ করেন।