• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পালানোর আগের রাতে গনভবমার্শাল’ল চেয়েছিল হাসিনা-দেশরক্ষা করেছেন ওয়াকার


প্রকাশিত: ১১:০৩ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৯ বার

 

শফিক রহমান : আগস্টের শুরুতে ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন শেখ হাসিনা আন্দোলন দমাতে মার্শাল’ল চেয়েছিল। কিন্তু দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধানের তরফে হাসিনার সে আশার গুড়েবালি ঘটে। দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধান হাসিনার অন্যায় আবদারে সায় না দিয়ে দেশরক্ষা করেন। বিশেষ সংস্থার তথ্য রয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, আর্মি নিরীহ মানুষের ওপর গুলি করবে না। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে মার্শালও দেয়া হবে না।

এসময় শেখ হাসিনা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তারপরও সেনাবাহিনী মার্শাল ল’ জারি করবে না বলে স্রেফ জানিয়ে দিয়ে দেশরক্ষা করেন সেনাপ্রধান। জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগের দিনও গণভবনে কোটি কোটি টাকা ছিল। কয়েকজন কর্মকর্তা এই টাকার দায়িত্বে ছিলেন। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গনভবনের টাকার দায়িত্বে এর মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জুনাইদ আহমেদ পলক ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

হাসিনার শেষ সময়গুলিতে তার কাছাকাছি ছিলেন অতি ধুরন্ধর তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত। তার কাছে টাকার বস্তাও ছিল। আন্দোলন দমাতে আরাফাত আওয়ামী লীগের সাইবার টিমের নাম করে বস্তাভর্তি টাকাও নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আরাফাত খরচ না করে নিজের গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ৪ঠা আগস্ট রাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষবার বৈঠক করেন। এসময় ওই চার নেতা ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক কর্তা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা একাধিক নেতা ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সময় টাকা বিলি-বণ্টন করা হয়। সর্বশেষ বৈঠকটি হয় তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পাঁচজন নেতা ও কর্মকর্তার সঙ্গে।

এর মধ্যে ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জুনাইদ আহমেদ পলক ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এছাড়া ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও একজন লেফটেনেন্ট জেনারেল। সেই বৈঠকে হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। হাসিনা বলেন, আর অপেক্ষা নয়। আর আপস নয়। গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হবে। এখন আর আন্দোলনে ছাত্র নেই। এখন যারা আছে তারা দেশবিরোধী জামায়াত শিবির ও বিএনপি। এদের দমন করেই দেশরক্ষা করতে হবে।

হাসিনা বলেন, নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হবে। বৈঠকে যোগ দেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। বৈঠকে আইজিপি জানান, পুলিশের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে গুলির সংকট, অন্যদিকে জন-উপস্থিতি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। গুলি করেও থামানো যাচ্ছে না। যদিও এ সময় শেখ হাসিনা আইজিপির প্রশংসা করেন। তবে সবার কথা শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, তোমাদের দিয়ে কিছু হবে না।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীকে বলবো গুলি করতে। কারফিউ আরও কঠিন করতে। কিন্তু হাসিনার শেষরক্ষা হয়নি। কারণ, সেনাবাহিনী থেকে শেখ হাসিনাকে আগেই জানানো হয়েছিল কোনো অবস্থাতেই তারা গুলি করবে না। হাসিনা এটা শোনার পর কোনো একজন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি তোমাদের জন্য কী না করেছি! তোমরা এখন সবাই গা বাঁচানোর চেষ্টা করছো। যা করার আমিই করবো। হাসিনা তখন আরও বলেন, সেনাবাহিনী মার্শাল ল’ দিচ্ছে না কেন। তাহলেই তো পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।

দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর কাছে তথ্য রয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, আর্মি নিরীহ মানুষের ওপর গুলি করবে না। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে মার্শালও সম্ভব না। এসময় শেখ হাসিনা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তারপরও সেনাবাহিনী মার্শাল ল’ জারি করবে না বলে স্রেফ জানিয়ে দিয়েছিল। সেনাবাহিনী পক্ষে এতে তাদের সায় নেই। তাছাও মার্শাল ল’ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত হবে না বলে জানানো হয়েছিল। পরে বৈঠকে রনেভঙ্গ দেন শেখ হাসিনা। এরপর হাসিনা একাই পা পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন এবং হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেন।

এর আগে আন্দোলন দমাতে টাকা ছড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।এসময় গণভবনের গচ্ছিত টাকা দেয়া হয় মুখচেনা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে। এর পরই পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
পরে ৫ আগস্ট গণভবনে লুট হয়। লুটকারীরা টাকাও নিয়ে যায়। লুটেরারা কত কোটি টাকা গেছে তা জানা যায়নি। তবে দেশপ্রেমিক জনতা ৫০ লাখ টাকা উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়।