• শুক্রবার , ৩ মে ২০২৪

পাচাটা সরকার চায় ওরা-


প্রকাশিত: ১২:১২ এএম, ৩১ আগস্ট ২৩ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২২ বার

জিয়া জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল-তাকেও একইভাবে খুন হতে হয়েছিলো

বিশেষ প্রতিনিধি : ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের স্মরণসভায় বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় এসে পদলেহন (পাচাটা) করবে বাংলাদেশে এমন সরকার চায় কিছু বিশ্ব মোড়ল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা বাংলাদেশে এমন একটি সরকার চায়, যারা তাদের পদলেহন করবে। তারা এখানে মোড়লিপনা করবে। আর এরা কারো বন্ধু হলে তার আর শত্রুর প্রয়োজন হয় না। ইউক্রেন এর জ্বলন্ত প্রমাণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থেকে দেশ থেকে লুট করে নিয়ে বিদেশে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বিএনপি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বরাবরের মতো শোকের মাসের শেষ পর্যায়ে স্মরণসভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

স্মরণসভায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বিশ্ব মোড়লদের আগ্রহের জায়গা বাংলাদেশ। তাই তাদের পদলেহন করবে এমন সরকারকেই চায় তারা।বিএনপিকে গণতন্ত্রের হত্যাকারি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তাদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুঁজছে মোড়লরা । ক্ষমতায় থেকে বিএনপি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। সেই লুট করা টাকা দিয়েই আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে আক্রোশ, খুন আর নির্যাতনের শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাপ কাউকে ছাড়ে না। যেভাবে জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল, জিয়াকেও একইভাবে খুন হতে হয়েছিলো। সেও খুন হয়। তার লাশের কিন্তু খবর নাই। সংসদ ভবনে সেখানে যে কবরটা দেয়া আছে, সেখানে জিয়াউর রহমানের কোন লাশ নাই। জেনারেল এরশাদ কিন্তু এই কথাটা বলে গেছে। বলেছিলো, তার লাশ তো পাওয়া যায়নি। কারণ জিয়ার লাশ খালেদা জিয়া দেখে নাই। জিয়ার লাশ তার ছেলে তারেক রহমান দেখে নাই। কোকো দেখে নাই, তার পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজন কেউ দেখে নাই। জেনারেল এরশাদ একটি বাক্স এনে জনগণকে ধোকা দিয়ে সংসদ ভবনের জায়গায় মাটি দিয়ে রেখে দিয়েছে। সেটাও অবৈধ স্থাপনা। বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে ফুল দেয়। কাকে দিচ্ছে ফুল তারা কি সেটা জানে? জানে না।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানই হ্যা না ভোটের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করে। এরপর একতরফা নির্বাচন, ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করে খালেদা জিয়াও নির্বাচন আর গণতন্ত্রকে কলুষিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমার অবাক লাগে যখন বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি। যাদের জন্ম হয়েছে হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। যাদের যাত্রা শুরু হয়েছে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তাদের কিছু প্রভু আছে, তারা একই সঙ্গে সুর মেলায় বাংলাদেশে নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। তাদের কাছে প্রশ্ন, জিয়ার হ্যাঁ-না ভোট, খালেদার ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচনের সময় গণতন্ত্র কোথায় ছিল? জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার নির্বাচন তো আমরা দেখেছি। আজ যারা বাংলাদেশে টর্চলাইট দিয়ে নির্বাচন খুঁজছেন, তখন তারা কোথায় ছিলেন? অন্ধ ছিলেন? তখন তো তাদের সোচ্চার দেখিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তো বিচার চেয়ে পাইনি। শেখ রেহানার পাসপোর্টটা পর্যন্ত জিয়া দেননি। রেহানা কি এদেশের নাগরিক ছিল না? তার মানবাধিকার ছিল না? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রক্ত দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র এনেছে। আমাদের হাতে গণতন্ত্র সুরক্ষিত নয়। সুরক্ষিত মিলিটারি ডিক্টেটরদের দোসরদের হাতে? যারা শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেয়, কৃষকদের গুলি করে হত্যা করে, তারা এখন গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী? কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন, যারা বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন, তারাও তাদের পক্ষে কথা বলেন।

খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট তো অনেকেরই জন্মদিন। কেউ কি পালন করে? কত বড় অমানুষ হলে জাতি যেদিন শোক দিবস পালন করে সেদিন সে জন্মদিন পালন করে! কতটা অমানবিক হলে শোক দিবসকে জন্মদিন বানিয়ে উৎসব করতে পারে। জিয়ার হাতে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী হত্যা হয়েছে। একইভাবে খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করেছে। এখনো মনে পড়লে শিহরিত হতে হয়। অনেককে ধরে কোথায় নিয়ে গেছে কেউ বলতে পারে না। যখনই বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, হত্যা খুন ও গুম করেছে। জনগণের ভাগ্য তারা পরিবর্তন করতে পারেনি।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, মিজবাউর রহমান ভূঁইয়া রতন, সাজেদা বেগম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি।