• শনিবার , ২৩ নভেম্বর ২০২৪

নয়া টাইগারদের স্বপ্নের মৃত্যু-বেদনায় নীল বাংলাদেশের হৃদয়


প্রকাশিত: ৭:১৫ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৭৪ বার

aপ্রিয়া রহমান  :  পারল না নয়া টাইগাররা। বেদনায় নীল হয়ে গেল বাংলাদশের হৃদয়। ফাইনালের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার বাংলাদেশের ।২০১২ সালে একবারে ট্রফি ছোঁয়ার দূরত্বে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যে এশিয়া কাপের ফাইনাল বাংলাদেশের ক্রিকেটে ‘২ রানের দুঃখ’ হয়ে থাকবে চিরকাল।

একটা বৈশ্বিক ট্রফি চাই, কিংবা বড় টুর্নামেন্টের একটা শিরোপা-বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার সেই দূরত্বটা যুবারাও ঘোচাতে পারল না। ২ রানটাই এবার ‘দুই ধাপে’র অলঙ্ঘনীয় এক দূরত্ব হয়ে থাকল। সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিল স্বাগতিকেরা।

যে ব্যাটিংটা যুব ক্রিকেটে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল এবার, সেটাই হতাশ করল। ২২৬ রানের পুঁজি নিয়ে তবুও লড়াই করল বোলাররা। কিন্তু সেই লড়াইটাই সান্ত্বনা। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠতে না পারার সান্ত্বনা আসলে হয়? ৮ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে জিতে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০০৪ সালে সর্বশেষ যেবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ বাংলাদেশে হয়েছিল, সেবারও ফাইনালে গিয়েছিল তারা। সেবার অবশ্য রানার্স আপেই সান্ত্বনা খুঁজতে হয় পাকিস্তানের কাছে হেরে। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ভারত।এত অল্প পুঁজি নিয়েও এত দূর লড়াইটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারায় বাহবা পেতেই পারে বাংলাদেশের বোলাররা।
দায় ব্যাটসম্যানদেরই। উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংসটাকে টেনে নিয়ে যেতে না-পারায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৭৪ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী মিরাজ ব্যাট হাতে লড়াই করেছেন। বল হাতেও প্রথম দুই উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে রেখেছিলেন দলকে।

কিন্তু অধিনায়কের যোগ্য জবাব এল অধিনায়কের ব্যাটেই। শিমরন হেটমায়ারের ৫৯ বলে ৬০ রানের ইনিংসটাই দলের মধ্যে এই বিশ্বাস ছড়িয়ে দিয়েছে, এই বাংলাদেশের কাছে বিশ্বকাপের আগে ৩-০তে সিরিজ হেরেছি তো কী হয়েছে! ক্যারিবীয় অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিলেন শামার স্প্রিঙ্গার। অধিনায়কের বিদায়ের পর বাকি কাজটি সেরে ফেললেন এই অলরাউন্ডার।

শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এর আগে বল হাতে ১০ ওভারে মাত্র ৩৬ রান দিয়ে দুই উইকেটও নিয়েছেন। ম্যাচের নায়কের দুই দফা ‘স্প্রিং-নৃত্য’ও দেখা গেল। বোঝা গেল, কেন তাঁর নাম স্প্রিঙ্গার।

স্প্রিঙ্গারের দ্বিতীয় ‘স্প্রিং নাচ’ ম্যাচ শেষে। তখন মিরাজরা মুখ কালো করে মাঠ ছাড়ছেন। আরও ২০ রান তুলতে না-পারা, দুটি সহজ ক্যাচ ফেলা, রান আউটে ভাগ্য পাশে না-পাওয়া…আক্ষেপের তালিকা দীর্ঘই। তবে খেলাটি বয়সভিত্তিক ক্রিকেট। জিতলে বড় প্রাপ্তি হতো সন্দেহ নেই। তবে এই হারের ক্ষত যেন বেশি দিন বয়ে বেড়াতে না হয়।

এমনিতে আগামীর সোনালি ভবিষ্যতের গানই তো শোনাচ্ছেন এই তরুণ সেনানীরা।শুধু আবারও দুই বছরের অপেক্ষা! আবারও সেই ‘দুই’…বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় আক্ষেপ আর অপেক্ষার প্রতিশব্দ যেন!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৫০ ওভারে ২২৬ (পিনাক ০, সাইফ ১০, জয়রাজ ৩৫, সাজমুল ১১, জাকির ২৪, মেহেদী ৬০, সাইফউদ্দিন ৩৬, সাঈদ ৩, মোসাব্বেক ১৪, মেহেদী রানা ১০*, সালেহ ১; জোসেফ ১/৩৩, হোল্ডার ২/৩৬, জন ১/২৯, স্প্রিঙ্গার ২/৩৬, পল ৩/২০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৮.৪ ওভারে ২৩০/৭ (পোপ ৩৮, ইমলাচ ১৪, হেটমায়ার ৬০, কারটি ২২, স্প্রিঙ্গার ৬২*, গুলি ৯, পল ৪, ফ্রিও ১২, জন ২*; মেহেদী ২/৫৭, মেহেদী রানা ০/২৮, সাইফউদ্দিন ২/৪৬, সালেহ ৩/৩৭, মোসাব্বেক ০/৩১)