‘নির্ভয়ে ভোটারদের ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি যেন রাখেন সিইসি’
স্টাফ রিপোর্টার : ভোটের আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভোটাররা আতঙ্কের মধ্যে আছে দাবি করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্ভয়ে ভোট প্রয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তার প্রতিশ্রুতি রাখবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘আর মাত্র একদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন। কিন্তু পুলিশ ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপিমনোনীত প্রার্থীর সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত আছে। বিএনপিমনোনীত প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ইত্যাদি ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে কুসিক এলাকার বর্ধিত নয়টি ওয়ার্ডে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া যে, সেখানকার সাধারণ ভোটারসহ বিএনপি সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্ধিত এই নয়টি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রসহ মোট ৪৩টি ভোটকেন্দ্রকে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে সেখানকার সাধারণ ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের হুমকি, গ্রেপ্তার ও তল্লাশির নামে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগমনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সুষ্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় রিটার্নিং অফিসার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সেখানকার নির্বাচনী পরিবেশ এবং সিইসির বক্তব্যের মধ্যে কোনো মিল নেই।’
‘তবুও আমরা আশা করব, কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট প্রদানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সিইসি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন,’ বলেন বিএনপির এই নেতা।
চীনের থেকে সাবমেরিন কেনায় ভারত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ায় দেশটিকে খুশি করতে এখন সরকার প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও চারিদিকে খেলতে গিয়ে এ ধরনের হোঁচট খাবেন তা তিনি আগে ভাবতে পারেননি। কারণ ভারত যে নাছোড়বান্দার মতো তার স্বার্থের অনুকুলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তিটি নিশ্চিত করতে চায়, এই বাধ্যবাধকতার মধ্যে আটকে পড়তে হবে, তা প্রধানমন্ত্রী পূর্বে অনুমান করতে পারেননি।’
প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন হয়ে যাবে এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা হারাবে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘এটার পরিণতি হবে ভয়ানক। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, দয়া করে আপনি বাংলাদেশকে কাশ্মীর বানাবেন না। নিজের ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নসাধকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যকে ভারতের জিম্মায় তুলে দেবেন না।’
রিজভী বলেন, ‘এমনিতেই নানা ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রমাগত চরম লোকসানের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। এখন বাংলাদেশে বেসরকারি চাকরিখাতে ভারত আধিপত্য বিস্তার করছে।
বাংলাদেশের লাখো-কোটি শিক্ষিত বেকার পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক অঙ্গনও এখন ভারতীয়করণ করা হচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে বাংলাদেশকে উপনিবেশ বানানোর এক সুদুরপ্রসারিত অশুভ পরিকল্পনার অংশ।’