• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

নারীবাজ নাগরী বহু পুরুষে আসক্ত সুমীর যৌবনে ডুবে ছিল


প্রকাশিত: ৯:৪৭ এএম, ২২ এপ্রিল ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৬ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  বহু পুরুষে আসক্ত সুমীর ছলনায় আকন্ঠ নিমজ্জিত নারীবাজ নাগরী শেষমেশ Nagri-sumi-www.jatirkhantha.com.bdতাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এজন্য স্বামী নুরুল ইসলামকে না জানিয়ে কবি ও গীতিকার সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন নাগরী তাকে ভারতে বেড়াতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সুমীর পাসপোর্ট’ও তৈরি হয়েছিল।কিন্তু সুমীর স্বামী এটা মেনে নিতে পারেননি।

সুমীর স্বামীর আশঙ্কা ছিল, বিদেশ গেলে তারা হয়তো আর ফিরবে না। তাই পাসপোর্ট তৈরিতে বাধা দেন নুরুল ইসলাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সুমী। রিমান্ডে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে এসব তথ্য দিয়েছে সুমী।

সূত্র জানান, ঢাকায় আসার পরে শাহীন নামের এক নারী সুমীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় নাগরীকে। পরিচয়ের পর থেকেই সুমীর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। নুরুল ইসলামের ও সুমীর সংসারের যাবতীয় খরচ চালাতেন শাহাবুদ্দীন। আর এ টাকার মধ্য থেকে একটি অংশ নিয়ে রোজই জুয়া খেলত সুমীর স্বামী নুরুল ইসলাম।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, স্বামীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে সুমী। নুরুল ইসলাম ব্যবসায়ী ছিলেন না। তিনি প্রায় সময় জুয়া খেলায় মেতে থাকতেন। নাগরী ছাড়া সুমীর কাছে যেসব পুরুষ আসত, সেই টাকার একটা অংশ নিয়েই নুরুল জুয়া খেলতেন। স্ত্রীর এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড জানতেন নুরুল ইসলাম। সুমীর ফ্ল্যাটে শাহাবুদ্দীনের নিয়মিত যাতায়াত থাকলেও তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, রিমান্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সুমী তথ্য দিলেও শাহাবুদ্দীন নাগরী মুখ খুলছেন না।বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ নম্বর ডম-ইনো অ্যাপার্টমেন্টের শোয়ার ঘর থেকে নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের দুই-তৃতীয়াংশ খাটের নিচে এবং বাকিটা বাইরের দিকে ছিল। তার মুখে রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। মরদেহের কিছুটা দূরেও রক্ত দেখা গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবেক কাস্টমস কমিশনার শাহাবুদ্দীন নাগরীর নারীপ্রীতির বিষয়টি অনেকটাই ওপেন সিক্রেট ছিল তার সহকর্মীদের মধ্যে। অবসরের আগ পর্যন্ত মাঝে মধ্যেই সুন্দরীরা হাজির হতেন তার অফিসে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় এসব বিষয়ে কথা বলার সাহস করতেন না অধস্তনরা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার কারণে তার পদোন্নতি আটকে ছিল দীর্ঘদিন। অবশেষে দুই বছর আগে কাস্টমস কমিশনার হিসেবেই তিনি অবসরে যান। পুলিশ জানায়, সুমী নুরুল ইসলামকে বিয়ে করার আগে বাবু নামের আরেকজনকে বিয়ে করেছিল। বনিবনা না হওয়ায় ভেঙে তার আগের সংসার। পরে সুমী আগের স্বামীর নামে নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলাও করে।

এরপর বাগেরহাট থাকা অবস্থায় নুরুল ইসলামের সঙ্গে সুমীর প্রথম পরিচয় হয়। ৩ বছর আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে সুমী নানা প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ে। এতে নুরুল ইসলামের সহায়তা ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবে সুমীকে নিয়ে বিত্তশালীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন নুরুল ইসলাম। সম্পর্ক তৈরি করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন তারা দু’জন। এরই মধ্যে শাহীন নামের এক নারীর সঙ্গে সুমীর পরিচয় হয়। শাহীনও বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

আর এ শাহীনের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল শাহাবুদ্দীন নাগরীর। শাহীনের মাধ্যমেই এক অনুষ্ঠানে সুমী ও নাগরীর পরিচয় হয়। তারপর থেকেই নাগরী ও সুমীর মধ্যে সখ্য হয়। দীর্ঘদিন সম্পর্ক রক্ষার পর সুমীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় নাগরী। এলিফ্যান্ট রোডের ডম-ইনো ভবনের ফ্ল্যাটটি নাগরীর জন্য ছিল একটি বিশেষ রুম। মূলত সেই রুমেই নাগরী প্রায়ই সময় কাটাতে যেতেন।

এমনকি নুরুল ইসলাম যেদিন মারা যান, সেদিনও বেলা ৩টা ১৩ মিনিটে শাহাবুদ্দীন নাগরী এলিফ্যান্ট রোডের ওই বাসায় আসেন এবং সন্ধ্যা ৭টা ১৭ মিনিটে বেরিয়ে যান। যা ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়েছে।