‘নাটকে বানান-ভুল উচ্চারন যেন নাহয়’
স্টাফ রিপোর্টার : সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন: ‘দেশে যত চ্যানেল আছে সবার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আজকাল যে নাটক পরিবেশিত হচ্ছে, তাতে মাঝেমধ্যে যে বাংলা উচ্চারণে অভিনয় হয় সেটি যেন দয়া করে বর্জন করা হয়। কেননা এটি আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে।’শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাংলা ভাষা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রিয়্যালিটি শো ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ এর চূড়ান্ত পর্ব ও মহোৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম ধরে নিতে পারে নাটকের এই বাংলা উচ্চারণই বুঝি বাংলার সঠিক উচ্চারণ। আসলে প্রমিত বাংলা বলে তো একটা বিষয় আছে। যারা এ নিয়ে মাঝেমধ্যে যুক্তি দাঁড় করান তাদের জন্য একটা কথা আমি সবসময়ই বলি, আমরা যখন বাড়িতে নিজেরা খাবার খাই তখন খাবার টেবিল এত গুছানো থাকে না, কিন্তু আমরা যখন অতিথি আপ্যায়ন করি তখন খুব গুছিয়ে খাবার পরিবেশন করি। আমাদের শিল্পটাও সেরকম একটা ব্যাপার। সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করার ব্যাপার আছে। তাই শিল্পসম্মত হওয়া খুব জরুরি। সেক্ষেত্রে বাংলা বানান এবং উচ্চারণ দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।’
বাংলা ভাষা নিয়ে ইস্পাহানি মির্জাপুর এবং চ্যানেল আইয়ের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন মন্ত্রী বলেন, ‘এমন চমৎকার আয়োজনের জন্য চ্যানেল আইকে তো অবশ্যই সঙ্গে ইস্পাহানি মির্জাপুরকেও অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’অনুষ্ঠানে চ্যানেল আই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং দর্শকদের অনুরোধে আবৃত্তি করেও শোনান আসাদুজ্জামান নূর।
‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ প্রথম আসরের সেরা বাংলাবিদের খেতাব জিতেছেন ঢাকার নুসরাত সায়েম। সেরা ছয় প্রতিযোগীর মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট গেল তার মাথায়। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন সাতক্ষীরার সিরাজুল আরিফিন এবং তৃতীয় হয়েছেন যৌথভাবে সিলেটের রাইসা সালসাবিল এবং ঢাকার সোয়েব সানিয়াদ খান তূর্য।
‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ এর শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগী হিসেবে নুসরাত সায়েম পেয়েছেন ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা প্রতিযোগী পেয়েছেন যথাক্রমে তিন লাখ ও দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি।এছাড়া শীর্ষ দশের প্রত্যেকেই পান ল্যাপটপ, বইয়ের আলমারি এবং বইসহ মোট ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের পুরষ্কার সামগ্রী। এই চূড়ান্ত পর্ব বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে চ্যানেল আইয়ে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
৭টি বিভাগীয় শহরে বাছাইপর্বের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠানটির প্রথম ধাপ। দেশের সব বাংলা, ইংরেজি ও মাদ্রাসা কারিকুলামের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির (ইংরেজি মাধ্যমের স্ট্যান্ডার্ড সিক্স থেকে ও-লেভেল) ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তাদের মধ্য থেকে শীর্ষ ৮০ জনকে নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ধাপ।মহোৎসবের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলেন বাংলা গানের দুই কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এর সাথে রাজের মুখাভিনয় যুক্ত করেছিল আরও মুগ্ধতা।
চ্যানেল আই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরের সভাপতিত্বে মহোৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশেষ অতিথি ছিলেন এম এম ইস্পাহানি লিমিটেড এর উপদেষ্টা মিসেস জাহিদা ইস্পাহানি। আরো উপস্থিত ছিলেন এম এম ইস্পাহানি লিমিটেড এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সাইদ হাসান ও মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নানসহ চ্যানেল আইয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা।
বিচারক প্যানেলে ছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা, সৌমিত্র শেখর, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক এবং বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।