নব্য জেএমবি’র বোমা-বিস্ফোরক খুঁজে বের করেছে সিটিটিসি’র ড্রোন
বিশেষ প্রতিনিধি : জঙ্গিদের বোমা-বিস্ফোরক খুঁজে বের করেছে সিটিটিসি’র ড্রোন। সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানার পর এবার মৌলভীবাজারের নাসিরপুরেও বিস্ফোরক শনাক্ত করলো ড্রোন। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা জানান, সীতাকুণ্ড, ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা ও মৌলভীবাজারের জঙ্গি আস্তানাগুলোতে পাওয়া বিস্ফোরকগুলো একই ধরনের বলে জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ড্রোনের মাধ্যমে ঘটনাস্থলের পুরো চিত্র ধারণ করে বিস্ফোরক শনাক্ত ও পরে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।’
নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানায় সিটিটিসির সোয়াট টিমের অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সীতাকুণ্ড, সিলেট ও মৌলভীবাজারে নিহত জঙ্গিরা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য। বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। নাসিরপুরেও জঙ্গিরা বিপুল পরিমাণ ইম্প্রোভাইজ এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) নিয়ে অবস্থান করেছে। জঙ্গি আস্তানার গেটসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যেসব বোমা, গ্রেনেড ও বিস্ফোরক তারা রেখেছিল, ড্রোন দিয়ে সেগুলোর ছবি তোলা হয়। পরে সেই ছবি দেখে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।’
পুলিশের সিটিটিসির প্রধান মনিরুল আরও বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের অভিযানে যে ধরনের আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) পাওয়া গিয়েছিল, এখানকার আইইডিগুলোও একইরকম। এছাড়া, এই অভিযানে অবিস্ফোরিত যে বোমা পাওয়া গিয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে বিমানবন্দরের ঘটনায় পাওয়া বোমার মিল রয়েছে।’
জঙ্গি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের মধ্যে কয়জন পুরুষ ও কয়জন নারী, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে কয়জন পুরুষ বা কয়জন নারী, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ নিহত জঙ্গিদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’
সিলেটের আতিয়া মহলে নিহত জঙ্গিদের সঙ্গে নাসিরপুরের জঙ্গিদের কোনও মিল কিংবা যোগসূত্র আছে কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা সবাই সব্য জেএমবির সদস্য। গত ২৪ মার্চ রাতে বিমানবন্দরের গোলচত্বরে পুলিশের চেকপোস্টের কাছে বিস্ফোরণে যে আত্মঘাতী মারা যায়, সেও নব্য জেএমবি’র সদস্য বলে ধারণা তাদের।’
সিটিটিসির এই শীর্ষ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘গতকাল বুধবার (২৯ মার্চ) আমি এখানে পৌঁছেছি। আমার সঙ্গে সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের উপ-কমিশনারও ছিলেন। গতকাল সোয়াট আসার পরে অভিযানের গুরুত্ব এবং বিস্ফোরকের ধরন ও পরিমাণ বিবেচনা করেই অপারেশনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। ঢাকা থেকে আনা হয় ড্রোন। সিদ্ধান্ত হয় এই অপারেশন চালাবে সোয়াট টিম।’
মনিরুল বলেন, ‘অভিযান শেষে আস্তানায় গিয়ে দেখা যায় এক বীভৎস চিত্র। ওই দৃশ্য এতটাই বীভৎস যে আপনারা তার চিত্র ধারণ করলেও সেগুলো প্রচার করতে পারবেন না। অভিযান শুরু হলে পালানোর পথ নেই দেখেই জঙ্গিরা সপরিবারে শক্তিশালী বোমার আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। এর আঘাতে সব জঙ্গির দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে সাত-আটটি লাশ থাকতে পারে।’