ধর্ষক সাফাতকে ধরতে নানা ফাঁদ পুলিশের
এস রহমান /মোস্তফা কামাল প্রধান:
ঢাকায় দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদকে ধরতে নানা ফাঁদ পেতেছে পুলিশ। বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন জাতিরকন্ঠকে জানান, সাফাত ঢাকাতেই আছে। ওকে পাকরাওয়ের চেষ্ঠা চলছে।ও যাতে দেশ থেকে পালাতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এর আগে সাফাতকে গ্রেপ্তারে তাদের গুলশানের বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সাফাত বাসায় আছেন বলে তার বাবা দিলদার আহমেদ দাবি করে এলেও তিনি সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না বলে পুলিশের অভিযোগ।
বনানী থানার পরিদর্শক তদন্ত মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, সাফাতের বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তার বাবা মিথ্যা বলেছেন। উনি হয়তো ভেবেছেন, পুলিশ তদন্তে কোনো প্রমাণ পায়নি বলে তাকে এখনও গ্রেপ্তার করেনি। সে বাসায় আছে বললে হয়তো তাকে সবাই নির্দোষ ভাববে বলে ভেবেছেন।
বনানী থানা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার দুপুরে আগে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৬২ নম্বর রোডে সাফাতের বাড়িতে যান। বেলা ১টার পর সেখান থেকে বেরিয়ে এসে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সাফাতকে তারা পাননি।
সাফাতের বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম বলেন, পুলিশ প্রতিদিনই আমার বাসায় অভিযান চালাচ্ছে। সাফাতকে তারা খুঁজছে। সে কোথায় আছে তা বলতে পারছি না, কারণ সে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না।
সোমবার রাতে সাফাতের বাবা জানিয়েছিলেন, ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সাফাত গুলশানের বাসাতেই ছিলেন।
ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ দাবি করে এই স্বর্ণ ব্যাবসায়ী বলছেন, সাফাতকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করা হচ্ছে। সাফাত আহমেদ সাফাত আহমেদ গত শনিবার বনানী থানায় মামলা হওয়ার পর সাফাতসহ পাঁচ আসামির কাউকেই পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। আসামির তালিকায় আরও আছেন একজন ঠিকাদারের ছেলে নাঈম আশরাফ (৩০), পিকাসো রেস্তরাঁর অন্যতম মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ (২৪)। বাকি দুই আসামির একজন সাফাতের দেহরক্ষী ও অন্যজন গাড়িচালক।
মামলার বাদী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেয়ে ২৮ মার্চ এক বান্ধবীসহ তিনি ‘দি রেইনট্রি’ হোটেলে গিয়েছিলেন। সেখানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাতভর আটকে রেখে সাফাত ও নাঈম তাদের ধর্ষণ করেন। অন্য তিনজন তাতে সহায়তা করে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সাফাত, নাঈম, সাদমান এবং ঢাকার একজন সংসদ সদস্যের ছেলে বনানী ১১ নম্বর সড়কে একটি রেস্তোরাঁ চালান। এছাড়া তাদের একাধিক সীসা বার রয়েছে।
পরিদর্শক আব্দুল মতিন বলেন, আমি পাঁচ থেকে ছয়বার সাফাতের বাসায় গিয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি। সাফাত বাসায় নেই, সে কোথাও পালিয়ে আছে, তাকে খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। আসামিরা যাতে দেশ ছাড়তে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।