• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘ধনীদের আয় বাড়ছে১৯% দরিদ্রদের কমছে’


প্রকাশিত: ১১:৩৪ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১৭ বার

 

বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে ধনীদের আয় বাড়ছে ১৯% আর দরিদ্রদের যা আয় ছিল তার চেয়ে ১% আরো কমছে বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তার মানে হচ্ছে দরিদ্ররা ক্রমাগত নাজেহাল অবস্থায় আছেন। এদিকে প্রতি বছর ২১ লাখ মানুষ দেশের শ্রম বাজারে প্রবেশ করছে। এর বিপরীতে চাকরি তৈরি হচ্ছে মাত্র ১৩ লাখ।আর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ায় প্রতি বছর আট লাখ নতুন বেকার তৈরি হচ্ছে। দেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন হলেও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও নতুন সরকারের জন্য অগ্রাধিকার শীর্ষক সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে-

সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মূল উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, প্রবৃদ্ধির সুফল সুষমভাবে বন্টিত হচ্ছে না। ধনী ৫ শতাংশ মানুষের আয় প্রায় ১৯ শতাংশ বাড়লেও দরিদ্র ৫ শতাংশ মানুষের আয় বৃদ্ধি না পেয়ে বরং ১ শতাংশ কমে গেছে। ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। শুধু আয় বৈষম্য নয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতেও বৈষম্য রয়েছে। সরকার বিপুল অর্থ ব্যয় করলেও স্বাস্থ্যখাতে দুই-তৃতীয়াংশ ব্যয় করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া শিক্ষাখাতে সরকার যে ব্যয় বৃদ্ধি করেছে তার বড় অংশ অবকাঠামো আর শিক্ষকদের বেতন-ভাতায় চলে যাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে শিক্ষায় মাথাপিছু খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৪৪৫ টাকা।

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী। সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদ-ই-মাহবুব প্রমুখ।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, শিক্ষা খাতে গুরুত্ব দিয়ে পূর্ব এশিয়ার তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, চীনের মতো দেশগুলো এগিয়ে গেছে। আমাদের শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ছে কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষার ঘাটতি রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তাখাতে ব্যয়ের ৯০ ভাগ সঠিকখাতে যাচ্ছে এমন দাবি করে পরিকল্পামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, কিছু চুরি-চামারি হচ্ছে ঠিক, কিন্তু এখন গ্রামের মানুষও প্রশ্ন তুলে, তারাও এসব বিষয়ে সরব হয়।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বলেন, এক সময় বলা হতো দারিদ্র্যকে মিউজিয়ামে পাঠানো হবে, কিন্তু এখন আর সেটি বলা যাচ্ছে না। রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গঠনের কথা বলি কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে নন-সেকুলার বিষয়গুলো রয়ে গেছে।

স্কুল কমিটির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হবে-

শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিষয়ে কোনো আপস করবো না। তিনি বলেন, স্কুল কমিটির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হবে। পাশাপাশি শিক্ষাখাতকে রাজনীতিকরণ করা যাবে না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভালো উদ্যোগ নেন কিন্তু তার আসে-পাশে যারা থাকেন তারা তাকে ভুল পথে পরিচালিত করেন।

বিচারকরা কর্মস্থলে থাকেন কিনা-

প্রধানমন্ত্রী বললেন, যে ডাক্তাররা কর্মস্থলে থাকবেন না তাদের ওএসডি করা হবে। এডমিন ক্যাডার হলে এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কিন্তু ডাক্তার ওএসডি হলে এটা তাদের জন্য আরো ভালো হয়। কারণ এই সময়ে তারা প্রাইভেট প্রাকটিসের মতো কাজগুলো আরো ভালোভাবে করতে পারে। তিনি বলেন, কর্মস্থলে ডাক্তাররা থাকেন কিনা এটা দেখা হয়, কিন্তু কখনও দেখা হয় না বিচারকরা কর্মস্থলে থাকেন কিনা। তারা বৃহস্পতিবার কর্মস্থল থেকে চলে যান, সোমবার গিয়ে অফিস করেন।