থানায় পুলিশী নির্যাতন নিয়ে যশোরের সাঈদের তেলেসমাতি
হাইকোর্ট প্রতিনিধি : থানার মধ্যে পিছমোড়া করে উল্টো ঝুলিয়ে রেখে নির্যাতনের যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে তা নিজের নয় বলে জানিয়েছেন যশোরের আবু সাঈদ। বুধবার হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে তিনি একথা জানান। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার পর আবু সাঈদকে হাজির হতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তলব করা হয়েছিল যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই নাজমুল ও এএসআই হাদিবুর রহমানকে।
বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন তারা। শুরুতেই সংবাদপত্রের ছবিটি দেখিয়ে আবু সাঈদের কাছে আদালত জানতে চান, এটা কি আপনার ছবি? জবাবে সাঈদ বলেন, ‘এই ছবি আমার না এবং ছবির স্থানটি কোথায় তাও বলতে পারব না।’
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে আবু সাঈদকে গত ৪ জানুয়ারি কোতোয়ালি থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আদালতে উপস্থিত দুই পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল ও হাদিবুর বলেন, ওই ছবি থানার ভেতরের নয়।
তখন আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চান— পত্রিকায় প্রকাশিত ছবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছিল কি-না? তখন পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, একটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে, তবে সেটা তারা করেননি।
এ সময় যশোর পুলিশ সুপারের পক্ষে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু বলেন, পুলিশ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তখন আদালত বলেন, পুলিশের প্রতিবেদন সম্পর্কে ‘আমাদের জানা আছে’। চৌগাছার একটা ঘটনায় এরকম প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল।
এরপর আদালত সাঈদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চান। সাঈদ তখন পরিচয়পত্র দেখাতে না পারলেও তার পক্ষে একজন আইনজীবী এফিডেভিট দাখিল করেন। তখন সাঈদকে বিচারপতি বলেন, ‘আপনি উকিলকে কত টাকা ফি দিয়েছেন? তার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করেছেন? পুলিশকে বাঁচানোর জন্যই এ এফিডেভিট দেওয়া হয়েছে। আমরা তো শুধু ভিকটিমকে হাজির হতে বলেছিলাম। আইনজীবী নিয়োগ দিতে বলিনি।’
এরপর হাইকোর্ট যশোর পুলিশ সুপারকে পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়ে রুলের বিষয়ে আদেশের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।