ত্রিভুজ প্রেমে খুন হয়েছে রওনক
স্টাফ রিপোর্টার : ত্রিভুজ প্রেমে খুন হয়েছে রওনক। প্রেমের কারণে’ই পুরান ঢাকার শাখাঁরীবাজারে হোলি উৎসবে কলেজছাত্র রওনককে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীসহ ৫জনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (০৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সকল তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি লালবাগ) ইব্রাহিম খাঁন।
গ্রেফতাররা হলেন- রিয়াজ আলম ওরফে ফারহান, ফাহিম আহম্মেদ ওরফে আব্রো, ইয়াসিন আলী, আল আমিন ওরফে ফারাবী খান ও লিজা আক্তার ওরফে মাইসা আলম। তাদের কাছথেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। ইব্রাহিম খাঁন বলেন, মাইসার সঙ্গে আগে রওনকের সম্পর্ক ছিল। পরে রওনক মাইসার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তুহু নামে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করে।
কিন্তু তুহুকে অন্য এক ছেলেকে পছন্দ করত। তুহুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ওই ছেলে ও রওনকের মধ্যে ফেসবুকে কথা কাটাকাটি ও একজন-অন্যজনকে হুমকির ঘটনা ঘটে। তাই ওই ছেলে পরিকল্পনা করে হোলি উৎসবকে বেছে নেয় রওনককে খুন করার জন্য। যেহেতু রওনকের সঙ্গে মাইসার আগে সম্পর্ক ছিল, তাই মাইসাকে ব্যবহার করে রওনককে হোলি উৎসবে নিয়ে আসে ওই তরুণ।
ওই তরুণকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। তাই তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।ইব্রাহিম খাঁন বলেন, পূর্ব পরিকল্পনামতো মাইসার কল পেয়ে ১ মার্চ রওনক কামরাঙ্গীর চরের বাসা থেকে কলাবাগানে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়। রওনক পৌঁছানোর আগেই ওই তরুণ লক্ষ্মীবাজার কেএফসি রেস্টুরেন্টের সামনে কয়েকজনকে নিয়ে পরিকল্পনা করে এবং কয়েকজনকে ৩-৪টি ছুরি সরবরাহ করে।
রওনক বন্ধুদের সঙ্গে শাঁখারী বাজার শনি মন্দিরের সামনে গেলে মাইসা তাকে একপাশে ডেকে নিয়ে যায়। তখন রওনককে ঘিরে ফেলে ২০-২৫ জন এবং এলোপাতারি চর-থাপ্পর মারতে থাকে। এক সময় এদের মধ্যে কয়েকজন রওনককে ছুরিকাঘাত করে।তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ফারহান নিজেই ছুরিকাঘাত করেছে। মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
তবে এই ঘটনার সঙ্গে তুহুর কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তুহুর দুই প্রেমিকের মধ্যে দ্বন্দের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু ওইদিন তুহুর সঙ্গে তাদের কারো যোগাযোগ হয়নি এবং কথোপকথনের কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি। সে ঢাকার বাইরে ছিল।লালবাগ বিভাগের ডিসি বলেন, রওনক, মাইসা, তুহু কিংবা এই বন্ধুমহলের কেউ কোন নির্দিষ্ট এলাকা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়।
তাদের সবার ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং মাঝে মধ্যেই তারা এক সঙ্গে আড্ডা দিত। এদের মধ্যে কলেজ ছাত্র যেমন রয়েছে তেমনি ফলের দোকানি, কয়েল বিক্রেতাও রয়েছে। আসলে তরুণরা কোথায় কি করছে, কোথায় যাচ্ছে এসব বিষয়ে পরিবারের আরো নজরদারী বাড়ানো উচিৎ।