তরুণীর জিম্মায় সানির জামিন আদালতে নাসরিনের মুচকি হাসি-
কোর্ট রিপোর্টার : যার অভিযোগে আরাফাত সানিকে কারাগারে যেতে হয়েছে, স্ত্রী হিসেবে দাবি করা সেই তরুণীর জিম্মায় এই ক্রিকেটারকে নারী নির্যাতন দমন আইনের মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আদালত। সানির জামিন আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এম জুয়েল আহমেদ বলেন, মামলার বাদীনীর জিম্মায় আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।জুয়েল জানান, দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেই বিচারক এ আদেশ দিয়েছেন।
বিচারক বলেছেন, তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। এই সময়ের মধ্যে তারা সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারে কি না তা দেখার জন্য। যদি না মেটে, তাহলে জামিন বাতিল হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, ওই তরুণী আদালতে জানিয়েছেন, সানির সঙ্গে তার সমঝোতা হয়েছে। জামিন হলে তার আপত্তি নাই। নিজেকে ‘সানির স্ত্রী’ দাবি করে ওই তরুণী চলতি বছর ৫ জানুয়ারি ক্রিকেটার সানির বিরুদ্ধে মোহাম্মাদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় গত ২২ জানুয়ারি সাভার থানার আমিন বাজার থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এরপর সানির বিরুদ্ধে যৌতুক আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরও দুটি মামলা করেন ওই তরুণী।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ২১ বছর বয়সী ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রী হিসেবে তাকে তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিলে গত বছর জুন মাসে সানি ফেইসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মেসেঞ্জারে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠান এবং নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন।
নারী নির্যাতন দমন আইনের মামলার আর্জিতে বলা হয়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে আরাফাত সানির সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই সানি তার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক চান।
ওই টাকা না দিলে সানি তার সঙ্গে ঘর সংসার করবেন না বলে জানান তার মা। তারপর সানি ওই তরুনীকে মারধর-গালিগালাজ করে বাসায় ফেলে চলে যায়।
আর ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে করা মামলায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারধর করার অভিযোগ আনা হয় সানির বিরুদ্ধে। নারী নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তারও আসামি। আদালত গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তার জামিন মঞ্জুর করে।
এক সময় বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা বাঁহাতি স্পিনার সানি আছেন কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী সেলে। বাকি দুই মামলায় জামিন হলে তার মুক্তি মিলতে পারে।
আদালতে নাসরিনের মুচকি হাসি-
আরাফাত সানির জামিন শুনানির সময় মামলার বাদী নাসরিন আদালতে হাসিখুশি ছিলেন। এ সময় বিচারক বাদীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা কি আপস হয়েছেন?’ জবাবে নাসরিন বলেন, ‘হাঁ আমি আপস হয়েছি।’
তখন বিচারক বলেন, ‘আরাফাত সানি যদি আগের রূপ ধারণ করে তাহলে জামিন বাতিল হবে, আর ভালো হয়ে গেলে জামিন বহাল থাকবে।’ পরবর্তী সময়ে বিচারক বাদীর জিম্মায় সানিকে এক মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন। আর জামিন আদেশ শোনার পর নাসরিনকে আদালতে মুচকি হাসি দিতে দেখা যায়।