• বুধবার , ২০ নভেম্বর ২০২৪

ঢাবি’র ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস জালিয়াতি


প্রকাশিত: ৪:০৩ পিএম, ২০ অক্টোবর ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১০৫ বার

ঢাবি প্রতিনিধি :  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নের ইংরেজি অংশটি ফাঁস হয়েছে। আজ শুক্রবার Question out-www.jatirkhantha.com.bdসকালে এই ভর্তি পরীক্ষা হয়।  বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে কয়েক জনের ই-মেইলে আজকের ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজি অংশের ২৪টি প্রশ্ন পাঠানো হয়। আজ পরীক্ষা শুরুর অন্তত আধা ঘণ্টা আগে কয়েক জনের মোবাইলে ওইসব প্রশ্নের উত্তরের একটি লিখিত কপি খুদেবার্তা হিসেবে পাঠানো হয়। রাতে পাওয়া প্রশ্নের কপি ও আজকের খুদে বার্তার কপি’র মিল রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে রাতেই কয়েকজন অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। আজ পরীক্ষা শেষে গতকালের ওই প্রশ্নগুলোর সঙ্গে আজকের প্রশ্নপত্রের অবিকল মিল পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এম আমজাদ আলী বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। আর প্রশ্ন ফাঁসের প্রশ্নই ওঠে না। তবে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির কারণে ১৫জনকে আটক করা হয়েছে।

ওদিকে সিআইডি এক খুদে বার্তায় জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করে কিছু পরীক্ষার্থী জালিয়াতি করেছে। এ ঘটনায় সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ (অর্গানাইজড ক্রাইম) তদন্ত দলের সদস্যরা এই জালিয়াতি চক্রের কয়েকজন মূল হোতা ও পরীক্ষার্থীকে আটক করে। বিকেলে এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।

তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে ৬১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিকসহ প্রায় সব বিভাগের যোগ্য শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মনে করেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন এই ইউনিটের পরীক্ষা তাঁদের জন্য শেষ সুযোগ।

এ বছর ঘ ইউনিটে ১ হাজার ৬১০টি আসনের বিপরীতে ৯৮ হাজার ৫৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার ১৪৭টি, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের জন্য ৪১০টি ও মানবিক শাখার জন্য ৫৩টি আসন রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রায় সব বিভাগে, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ছাড়া প্রায় সব বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন। আর কলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য যে ৫৩টি আসন রয়েছে, সেগুলো ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ৯টি বিভাগ এবং গণিত ও পরিসংখ্যানে ভর্তি হওয়ার জন্য।

গত বছর ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রতি আসনের বিপরীতে ৭০ জন এবং ২০১৫ সালে ৬২ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ধারায় একটি বড় পরিবর্তন আসে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা শেষে অনেকেরই বিজ্ঞানের কোনো বিষয় কিংবা প্রকৌশল বা মেডিকেলে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু সেসব বিষয়ে ভর্তির সুযোগ না হলে তাঁদের ঘ ইউনিটের মাধ্যমে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের কোনো বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করতে হয়। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়ে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ৫৩টি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ৩৩টি স্কুল-কলেজসহ মোট ৮৬টি কেন্দ্রে আজ একযোগে এই পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষার হলে মুঠোফোন বা টেলিযোগাযোগ করা যায় এমন কোনো যন্ত্র সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরীক্ষা চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত দায়িত্ব পালন করবেন। গত বুধবার গ ইউনিট ও চ ইউনিটের ফল প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে জালিয়াতি করার বিষয় উঠে আসে। এতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছিলেন, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কাজ করছে।