• শনিবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফ ভোটে দৃশ্যপটে বদি


প্রকাশিত: ৩:১২ এএম, ৪ মে ২৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৩ বার


প্রতিপক্ষকে গুলি না পটকা খুঁজছে পুলিশ-

 

 

বিশেষ প্রতিনিধি/ কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলমকে লক্ষ্য করে কথিত গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত পৌণে ১১টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূর্ব মহেষখালীয়াপাড়া জোড়া পুকুরপাড় মসজিদের রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় এ গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৪টায় টেকনাফ থানায় জিডি করেছেন নুরুল আলম।জিডি নম্বর-১৩৬। তারিখ:৩/৫/২০২৪। ঘটনাটি তদন্ত করছেন এস আই শাহাবুদ্দিন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তৃতীয় ধাপের তফসিলে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। ২ মে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বদির পছন্দের প্রার্থী জাফর আলম। গত উপজেলা নির্বাচনেও জাফর আলমকে হারিয়ে নুরুল আলম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্থানীয় রাজনীতিতে নুরুল আলম বদির বিরোধী হিসেবে পরিচিত। আর জাফর আলম বদির অনুসারী।

নুরুল আলম দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, গতকাল রাতে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের যুবলীগ–ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান তিনি। হঠাৎ বদি তাঁর স্ত্রী কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের স্টিকারযুক্ত সাদা গাড়ি নিয়ে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর দুই রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলম। গুলি তাঁর গায়ে লাগেনি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তিনে নিরাপদে ফিরে আসেন। এ ব্যাপারে রাতে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নুরুল আলম আরও অভিযোগ করেন, ‘চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফরের পক্ষে হয়ে বদি তাঁর স্ত্রীর (জাতীয় সংসদ সদস্য) স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে প্রচারণার পাশাপাশি বিভিন্ন পথসভায় আমাকে ও আমার নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন।’এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘আমি কেন আলমকে গুলি করতে যাব। এটা একটা ভুয়া কথা নুরুলে ছড়াইছে। এ সম্পর্কে বদি আরো বলেন, জিডিতে গুলির কোনো কথা না লিখে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন নুরুল আলম। আসলে ভাই ওখানে একটা বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান হচ্ছিল। সেখানে পটকা ফুটেছে। সেই পটকারে ফুলাইয়া গুলি বানাইছে নুরুলে।

তবে কে বা কারা পরপর দুটি পটকা ফাটিয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। বদি বলেন, আমরা সেখানে গিয়েছি, রবি আলম নামের ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক সদস্যকে অপহরণ করা হয়েছে বলে খবর পেয়ে। এরপর আমি ও জাফরসহ ঘটনাস্থলে গেলে রবি আলমকে বাধা অবস্থায় উদ্ধার করি। রবি আলম জাফর চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে নির্বাচন করছেন।’ চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলমও দাবি করেন, পটকার শব্দ পাওয়া গেছে।

ওদিকে অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নুরুল আলম। তিনি দাবি করেন, ঘটনায় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এসব সাজানো হচ্ছে।
ঘটনা সম্পর্কে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনী দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলমের ওপর কথিত গুলি বর্ষণের ঘটনা সঠিক নয়। উনি জিডিতেও তা উল্লেখ করেননি।তবে তিনি একটি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার–৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুর রহমান বদি। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদির পরিবর্তে তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তারকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক তালিকায় পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বদির নাম রয়েছে। তালিকায় গডফাদার হিসেবে আছেন বদির চার ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম।