টাকা পাচার নিয়ে তুলকালাম-মন্ত্রী বললেন সত্য হলে বিচার
স্টাফ রিপোর্টার : বিদ্যমান তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার দুর্বলতা ও এটি নিয়ে দ্বিধা দূর করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘এটি ইলেকট্রনিক মাধ্যম নিয়ে করা হয়েছিল। এর মধ্যে যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটিকে আমরা দূর করবো।’
বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিক্যাটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করতে যাচ্ছি। এটি এখন ভেটিং পর্যায়ে রয়েছে। এটা চূড়ান্ত হলেই আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার দুর্বলতা এবং বিতর্ক থাকবে না। এটি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে চলে যাবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এই অ্যাক্ট এর মাধ্যমে কেউ হয়রানির স্বীকার হবেন না। এটা আমি আপনাদের কথা দিতে পারি। আর সাংবাদিক রাজুকে গ্রেফতার এবং রিমান্ডের বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো। আমি এটুকু বলতে পারি আপনারা ন্যায়বিচার পাবেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ‘ফ্রিডম অব প্রেস’ এ বিশ্বাসী। এমন কোনো আইন হবে না, যাতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়।’
২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ৮৯৭ কোটি ডলার (৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি) পাচার হয়েছে বলে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক এই গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থা বলছে, ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল- এই ১০ বছরে বাংলাদেশ এ প্রক্রিয়ায় ৭৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও অন্যান্য অবৈধ পথে এই অর্থ পাচার করা হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত ‘ইলিসিট ফাইন্যান্সিয়াল ফ্লোজ টু অ্যান্ড ফ্রম ডেভেলপিং কান্ট্রিজ: ২০০৫-২০১৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে জিএফআই।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মানি লন্ডারিং আইন রয়েছে। যদি টাকা পাচারের ঘটনাটি সত্য হয়, তাহলে আমরা এই আইনেই এটির বিচার করতে পারবো।’
আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশে একটি অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট আছে। যদি এই রিপোর্টের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে এ আইনে বিচার হবে।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে-
বিচার বিভাগ নিয়ে প্রধান বিচারপতির সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন বক্তব্যের বিচার গণমাধ্যমের উপর ছেড়ে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি সচিবালয়ে নিজ দফতরে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দেবো না। আমি কোনো কথাই বলেবো না, এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই। যেসব বক্তব্য তিনি দিয়েছেন আপনারা গণমাধ্যম সেটার বিচার করবেন, দেখবেন। আমার যদি কোনো বক্তব্য থাকে তাহলে আমি সেটা তার সামনেই দেবো।’
এদিকে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কে উন্নয়ন নিয়ে বার্নিকাটে সঙ্গে বৈঠক করেছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ করতে কাজ করছে সরকার। কীভাবে দু`দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে বার্নিকাটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জঙ্গি সমস্যা সমাধান নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। ভাল সম্পর্কের ক্ষেত্রে কথা আদান প্রদান জরুরি। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকের ধারা অব্যাহত থাকবে।’