• শুক্রবার , ২২ নভেম্বর ২০২৪

টাইগারদের কাছে ১০৫ রানে চিৎপটাং আফগানিস্তান


প্রকাশিত: ৬:৪০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৫ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২২৪ বার

 

 

মোঃ বাদশা:   বাংলাদেশকে তাদের নিজেদের মাঠেই হারিয়ে ম্যাচ শুরুর আগে নিজেদের ‘ফেভারিট’ দাবি করছিল আফগানরা। তাদের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি তো আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে হুমকি দিয়েছিলেন, চাপে থাকবে বাংলাদেশ। মাঠেই বাংলাদেশ দেখিয়ে দিল কারা এগিয়ে। সঙ্গে নেওয়াও হলো ফতুল্লায় ৩২ রানে Masrafir-www.jatirkhantha.com.bdtহারের প্রতিশোধ।

বিশ্বকাপ অভিষেকে কিছু একটা করে দেখানোর প্রত্যয়ে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নামা আফগানরা শুরুতে সিঁদুরে মেঘটাও দেখাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তর্জন–গর্জনই সার। আজ বাংলাদেশ আফগানদের চোখ থেকে রঙিন চশমাটা হ্যাকচা টানে খুলে ফেলে সাদা–কালো দুনিয়াটা দেখিয়ে দিল। বুঝিয়ে দিল, কোথায় আফগানিস্তান আর কোথায় বাংলাদেশ। ম্যাচ জয়ের ব্যবধানটা যে ১০৫ রানের!

শুরুতে রানের গতি ভালো না হলেও মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। এরপর মাশরাফি বিন মুর্তজা, রুবেল হোসেনদের মারাত্মক বোলিংয়ে সহজ জয় নিশ্চিত করে তারা।

বুধবার ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শেষ বলে ২৬৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ৪২ ওভার ৫ বলে ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান।

আফগান–জুজুর কারণেই কিনা শুরুতে খোলসবন্দী বাংলাদেশকে শেষে খোলসছাড়া করলেন সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিম। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও সেরা দুই ব্যাটসম্যানের যুগলবন্দী বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনল খেলায়। ২৬৭ রানের সংগ্রহে আফগানদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে মাশরাফি–রুবেল এনে দিলেন দুর্দান্ত শুরু। মাঝখানে তাসকিন–মাহমুদউল্লাহ। আর নটে গাছটি মুড়িয়ে দিলেন সাকিব।

১৬২ রানে অলআউট হয়ে বাস্তবতার জমিনে নেমে এল আফগানিস্তান। শেষ অবধি বাংলাদেশের জয়ের ধরনটাই চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিচ্ছে, ক্রিকেটে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যেতে এখনো ঢের বাকি আফগানদের। দলটি সম্ভাবনাময় হতে পারে, প্রতিভায় দেদীপ্যমান হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের তুলনায় তাদের অবস্থানটা অনেক পেছনেই।

-celebrates-with-teammates Masrafi-www.jatirkhantha.com.bdজয়ের ভিতটা প্রথমে তৈরি করেছিলেন সাকিব ও মুশফিক। ১১৯ রানে বাংলাদেশ শুধু ৪ উইকেটই হারায়নি, প্রায় ৩০ ওভার খেলাও ততক্ষণে শেষ। রান রেটটা আফ্রিকান দুর্ভিক্ষপীড়িত শিশুর মতো। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেট জুটিতে এই দুজনের ১১৪ রানের জুটি। সাকিব একটু ধীরলয়ে শুরু করলেন, কিন্তু মুশফিক শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণ করে বুঝিয়ে দিলেন, জুজুটা স্রেফ জুজুই। ৩৬ থেকে ৪০ ওভারে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে দুজন রান তুললেন প্রায় ১০ করে। ৬৩ করে সাকিব আউট হওয়াতে ভাঙল এই জুটি। খানিক পর ৭১ করে ফিরেছেন মুশফিকও। কিন্তু বড় পুঁজি ততক্ষণে নিশ্চিত। মাশরাফির ৯ বলে ১৪ রানের ক্যামিও রাখল ভূমিকা। যদিও স্কোরটা আরও বড় হতে পারত।

না হওয়ার কিছুটা দায় মাশরাফিরও। সেই দায় মোচনের জন্যই যেন শুরু থেকেই আগুন ঝরালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টানা দুই ওভারে শুরুতেই তুলে নিলেন দুই উইকেট। পরের ওভারে রুবেলও শিকারে যোগ দিলে আফগানদের স্কোর ৩ উইকেটে ৩! ৭৮ রানে তাদের পঞ্চম উইকেটের পতন, আফগান ইনিংসটাকে একটা মাইনফিল্ডের মতোই লাগছিল। মাঝখানে নবী–শেনওয়ারির প্রতিরোধ পরাজয়টা কেবল বিলম্বিতই করেছে। বিশ্বকাপে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয়টা দিয়েই যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ।

মাশরাফির ৩ উইকেটের পাশাপাশি ২টি উইকেট সাকিব আল হাসানের। একটি করে উইকেট তাসকিন, মাহমুদউল্লাহ আর রুবেলের। মাশরাফির বোলিং বিশ্লেষণটা বলতেই হচ্ছে: ৯–২–২০–৩!