‘ঝেঁটিয়ে বিদায় থেকে রক্ষা পেয়েছি’
স্টাফ রিপোর্টার : বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মন্ত্রী পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেকে ‘সৌভাগ্যবান’ মনে করছি কারণ এতে ঝেঁটিয়ে বিদায় থেকে রক্ষা পেয়েছি।আজ সোমবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজের শেষ কর্মদিবসে বিদায়ী অনুষ্ঠানে এসব বলেন মুহিত।
শেখ হাসিনার সরকারে দুই মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর অবসর চাইছিলেন তিনি। এজন্য এবার নির্বাচনও তিনি করেননি। অবশ্য একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পরদিন মুহিত বলেছিলেন, শেখ হাসিনা চাইলে আরও কিছু দিন কাজ চালিয়ে যেতে তার আপত্তি নেই।
কিন্তু টানা তৃতীয় মেয়াদে যে সরকার শেখ হাসিনা গড়েছেন সোমবার, তাতে প্রবীণ সব নেতাকে তিনি বাদ দিয়েছেন। আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে বাদ পড়েছেন মতিয়ার চৌধুরীর মতো রাজনীতিকও, যাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক গত ১০ বছরে ছিল না।বিদায়ী অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি আমার খুব আনন্দের বিষয়, আমাকে বিদায়-টিদায় করতে হয়নি, আমি নিজে নিজেই বিদায়টা নিয়ে নিয়েছি। সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
আগামী ২৫ জানুয়ারি ৮৫ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া মুহিত বলেন, এ বয়সে আল্লাহ আমাকে এমন রেখেছেন যে আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো একটি জটিল মন্ত্রণালয়ে একটি জটিল দেশে পরিচালনা করেছি। এখন তো আমার অবসর নেওয়ার দরকারই।
গত ১০ বছরে বাংলাদেশকে ‘ভিক্ষুকের দেশ’ থেকে উত্তরণ ঘটানোর কৃতিত্ব দাবি করে মুহিত বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ এখন বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ বলতে সাহস পায় না। দেশকে এ অবস্থায় উত্তরণে আমার অংশগ্রহণ থাকায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমরা আগামী পাঁচ বছর ধারাবহিকভাবে তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকছি। আগামী ৫ বছরে দেশে এমন একটি জায়গায় যাবে, যা রোধ করা সম্ভব হবে না।
অবসরে বই পড়ে কাটাবেন জানিয়ে সাবেক আমলা মুহিত বলেন, বাংলাদেশের করার কোনো ক্ষেত্রের অভাব নেই। আমার সংগ্রহে ৫০ হাজার বই আছে। সবগুলো পড়া হয়নি, এগুলো পড়ব। আর আমি ৩৪টি বই লিখেছি। এর মধ্যে ১২টি ইংরেজি, আরও বই লিখব।শেখ হাসিনা তার নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন কুমিল্লার আ হ ম মুস্তফা কামালকে, যিনি বিদায়ী সরকারে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে আসছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী করা হয়েছে গত পাঁচ বছর অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা সাবেক আমলা এম এ মান্নানকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে সোমবারের বিদায়ী অনুষ্ঠানে মান্নান বলেন, সকলের সহযোগিতায় এতদিন দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতেও দায়িত্ব পালন করার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।
অনুষ্ঠানে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।