ঝলসাবে বাংলাদেশী গেইল সাব্বির-আবু হায়দার
স্পোর্টস রিপোর্টার: ‘কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস বনাম বরিশাল বুলস’ এর আজ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।লড়াইয়ের ভেতরের লড়াই আজ। আবু হায়দারের আগুন ঝরানো বোলিং আর সাব্বির রহমানের হাতে থাকা মাঠ ছাড়া করা সব শট প্রেক্ষাপটে বাজাচ্ছে সেই যুদ্ধের দামামা।
আবু হায়দার ঘরোয়া ক্রিকেটে একেবারে আনকোরা নাম নন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গত মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার হয়ে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। তবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জার্সিতে এবারের বিপিএল তাঁর আকাশটাকে করে দিয়েছে অনেক বড়। ২১ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক, সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিকাড়া খেলোয়াড়ও।
তবে ফাইনালকে সামনে রেখে এসব কিছুই মাথায় আনতে চাচ্ছেন না বাঁহাতি এই পেসার। তাঁর ভাবনাজুড়ে শুধুই আজকের ম্যাচে। চোখে জেতার নেশা, ‘এ রকম পরিস্থিতিতে কিছুটা উত্তেজনা আসেই। তবে আমার ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নেই। দলগতভাবে যেন টুর্নামেন্টটা ভালোভাবে শেষ করতে পারি, চ্যাম্পিয়ন হতে পারি, সেটাই একমাত্র লক্ষ্য।’
ফাইনালে নির্ভার থাকার কৌশলও হতে পারে এটা।
ভালো কিছু করতেই হবে—এ রকম প্রতিজ্ঞা বেশির ভাগ সময় চাপ হয়ে বসে মাথার ওপর। ব্যাপারটাকে ‘আরও একটা ম্যাচ, আরও একবার ভালো খেলা এবং আরও একটি জয়ের চেষ্টা’ হিসেবে নিলেই এগিয়ে যেতে সুবিধা। আর মনে করতে না চাইলেও ফাইনালে শিরোপা জয়ের একটা চাপ এমনিতেই থাকে। জেনেশুনে আরও চাপ কেন নেবেন আবু হায়দার? অবশ্য স্মরণীয় বিপিএলের ফাইনালটাকে অবিস্মরণীয় করে রাখার প্রতিজ্ঞা ঠিকই গুঞ্জরিত তাঁর মনে, ‘নিজস্ব একটা পরিকল্পনা তো আছেই। এখনই সেটা বলতে চাচ্ছি না।’
হায়দার যদি চাপমুক্ত থাকতে এই পথ নিয়ে থাকেন, তাহলে সাব্বিরকে রীতিমতো ‘ওজনহীন’ই বলতে হয়। নিজের কাছে তাঁর নিজেরও কোনো প্রত্যাশা আছে বলে মনে হচ্ছে না। বিপিএল ফাইনালের আগেও লক্ষ্য স্থির না করে ব্যাটিং করার দর্শন থেকে সরেননি জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান, ‘আমি কখনোই আগে থেকে ঠিক করি না কী করব। লক্ষ্য ছাড়াই খেলি সব সময়। এবারও তাই করব।’
কিন্তু ক্রিস গেইল চলে যাওয়ায় আগের ম্যাচের মতো আজও তো সাব্বিরের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বরিশাল! বিপিএলে একটার পর একটা ব্যর্থতার পর গত দুই ম্যাচে তাঁর ব্যাটই দলকে আলোর পথ দেখিয়েছে। কিন্তু এবার যেন সাব্বির খুঁজছেন অন্য কাউকে, ‘আমার খেলায় আজ পর্যন্ত কোনো দল চ্যাম্পিয়ন হয়নি। এবারও হবে না। আগের দুই ম্যাচে আমি ভালো খেললেও ফাইনালে দেখবেন অন্য কেউ খেলে দেবে।’ক্রিকেটে এ রকম হতেই পারে। তবে তার আগ পর্যন্ত আজকের ফাইনালের আরেক নাম—আবু হায়দার বনাম সাব্বির রহমান।
এর আগে ও কেমন বল করেছে, তা নিয়ে ভাবছি না। ফাইনালে ও বল করবে, ব্যাটিংয়ে থাকলে আমি খেলব, মারার বল পেলে মেরে দেব—এর বেশি কিছু নেই মাথায়। আগে ফর্মে ছিলাম না বলে ওর অনেক বলে ঠিকভাবে খেলতে পারিনি। গত দুটি ম্যাচ ভালো খেলে এখন ইনশা আল্লাহ ফর্মে আছি, আত্মবিশ্বাসও ফিরে পেয়েছি।
এবার আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেট ও বিভিন্ন সময় অনুশীলনে আবু হায়দারের বল খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। কখনোই কঠিন মনে হয়নি ওর বল। তবে লাইন-লেংথ খুব ভালো, বিপিএলে তো খুবই ভালো বল করছে। ওকে বলতে পারেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের একমাত্র উইকেটশিকারি বোলার।
তার মতে ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমার সাব্বির ভাই। এখন তো বাংলাদেশ দলের হয়েও অনেক ভালো খেলছেন। ওনার সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা বিগ হিটে। অনেক বড় বড় শট খেলতে পারেন সাব্বির ভাই। অবশ্য সব ব্যাটসম্যানেরই দুর্বল জায়গা থাকে, ওনারও নিশ্চয়ই আছে। আমার চোখে সেটা কী, তা এখন বলব না। চেষ্টা থাকবে ভালো বোলিং করে ওনাকে আটকাতে।