• রোববার , ১৯ মে ২০২৪

ঝর্ণারানী ঈদের শেমাই রাঁধলেন কিন্তু স্বজনদের খাওয়ানো হলোনা-


প্রকাশিত: ১০:৪১ পিএম, ৭ জুলাই ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৮ বার

আসমা খন্দকার :  শোলাকিয়ার জঙ্গি হামলার সময় জানালা দিয়ে আসা একটি গুলি কেড়ে নিল ঝর্ণা solakia zorna-www.jatirkhantha.com.bdরানী ভৌমিকের সকল স্বপ্ন। ঝর্ণারানী ঈদের শেমাই রেঁধেছিলেন কিন্তু স্বজনদের কাউকেই খাওয়াতে পারলেন না। মা ঝর্ণা ভৌমিকের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বাসুদেব ভৌমিক।

ভৌমিক বাড়িতেও ছিল আজ ঈদের আনন্দ। ভৌমিক বাড়ির কর্ত্রী ঝর্ণা রানী ভৌমিকও সেমাই রেঁধেছেন। রুটি বানানোর জন্য ময়দা’ও মাখাচ্ছিলেন। এমন সময় চারদিকে গোলাগুলি। তখনই একটা প্রয়োজনে রান্নাঘর থেকে শোয়ার ঘরে যান ঝর্ণা। এ সময়ই জানালা দিয়ে একটা গুলি এসে ঠিক মাথায় লাগে তাঁর।

Basudeb-www.jatirkhantha.com.bdঘরের ভেতরেই পড়ে যান তিনি। মেঝে ভেসে যায় রক্তে। পরিবারের সদস্যদের তাকিয়ে তাকিয়ে তাঁর চলে যাওয়া ​দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। ঝর্ণার বড় ছেলে বাসুদেব ভৌমিক ঢাকার একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। রান্নাঘরে মায়ের রান্না করা সেমাই আর ময়দার গোলা দেখিয়ে বাসুদেব বলছিলেন, ‘কেমন করে বিশ্বাস করব মা নেই। মায়ের ঘরটা ভেসে গেল মায়েরই রক্তে।’ বাসুদেব চোখ মোছেন আর একে-ওকে মায়ের হাতে গড়া শেষ খাবারটা দেখান।

ঝর্ণার স্বামীর নাম গৌরাঙ্গ ভৌমিক। গৌরাঙ্গর ভাই উপেন্দ্র ভৌমিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘রুটি বেলবে বলে আটা মাখছে। পোলায় লুঙ্গি চাইছিল। ঝর্ণা রান্নাঘর থেকে সেটা দিতে ঘরে যাওয়া মাত্রই জানালা দিয়া গুলি আইলো।

Ahazari-www.jatirkhantha.com.bdআমরা সবাই তখন মেঝেতে শুইয়া আছিলাম। ক্যামনে কী হইয়া গেল।’ঝর্ণার ছেলে বাসুদেব বলেন, ‘আমরা তো কারো সাতে-পাঁচে ছিলাম না। তবুও আমার মাকে এভাবে মরতে হলো।’
ভৌমিক বাড়িতে এখন চলছে মাতম আর আহাজারি। পুলিশ লাশ নিয়ে গেছে ময়নাতদন্তের জন্য।কিন্তু আর্তনাদ থামছে না ঝর্ণারানীর স্বজনদের..।