• রোববার , ১৭ নভেম্বর ২০২৪

জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি বনানীর লম্পট ধনীর দুলালদের


প্রকাশিত: ৩:১৭ পিএম, ১২ মে ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫০ বার

 

বনানীর লম্পট ধনীর দুলাল সাফাত (বায়ে) ও সাদমান
বনানীর লম্পট ধনীর দুলাল সাফাত (বায়ে) ও সাদমান

স্টাফ রিপোর্টার  :  অবশেষে বনানীর লম্পট ধনীর দুলালরা গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি করেছে। ধর্ষকরা সাহসের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা আছে বলে প্রতীয়মান হয়। তবে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ওই ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছ। কমিটিতে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ), ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ), উপকমিশনার (গোয়েন্দা বিভাগ), উপকমিশনার (গুলশান) ও উপকমিশনার উইমেন সাপোর্ট সেন্টার রয়েছেন।

এর আগে সকালে ওই দুইজনকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ডিবির উপকমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম।

ডিবি কার্যালয় থেকে সাফাত ও সাদমানকে শুক্রবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে নেওয়া হয়। রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলের ওই ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর সিলেটের জালালাবাদ এলাকার একটি বাড়ি থেকে পুলিশ সদর দফতরের একটি বিশেষ দল সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার সাফাত (২৬) ‘আপন জুয়েলার্সের’ মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে এবং সাদমান (২৪) ‘পিকাসো রেস্তোরাঁর’ অন্যতম মালিক ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে।

দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের এই মামলায় সাফাতের আরেক বন্ধু নাঈম আশরাফ (প্রকৃত নাম আবদুল হালিম) এবং তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ ও গাড়িচালক বিল্লালও আসামি।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ঘটনার ৪০ দিন পর ভুক্তভোগী ওই দুই ছাত্রী গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘রেইনট্রি হোটেলে’ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে দুজনকে ধর্ষণ করেন সাফাত ও নাঈম। সাদমানসহ অন্য তিনজন ছিলেন সহযোগী।

এদিকে দুই ছাত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেওয়া হয়। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের ওই হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন।

আদালতে জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর সাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তারা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। সেখানে তারা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ তারা চলে আসতে চেয়েছিলেন।

তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন ও তাকে মারধর করেন। এরপর তাদেরকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া যায়। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম আশরাফ মারধর করেন। তারা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানান।

দুই তরুণী জানান, আসামিরা ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তাদের কথামতো না চললে কিংবা ২৮ মার্চের ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রথমে থানা-পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করে। আসামি ও তাদের পরিবার ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।