জনতার জয়ে তুরস্কে গণতন্ত্রের জয়গান
আঙ্কারা থেকে জাবেদ কিসওয়ান : জনতার জয়ে তুরস্কে গণতন্ত্রের জয়গান বইছে। ইস্তাম্বুলের মতো তুরস্কের প্রধান শহরগুলোতে জনতা জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে গান গেয়ে সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করছে।অবস্থাটা এমন যে তুরস্ক যেন নতুন করে স্বাধীন হলো।
শনিবার বিকেল থেকে ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মানুষ রাস্তায় নেমে গনতন্ত্রের জয়গান গায়। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। তাদের সবার মুখেই ছিল গণতন্ত্রের জয়গান প্রেসিডেন্ট এরদোগানের জয়যাত্রার শ্লোগান ।
তাদের বক্তব্য একটাই- কিছুতেই দেশ কিংবা গণতন্ত্র সামরিক সদস্যদের হস্তগত হতে দেয়া যাবে না। রাজধানীর আঙ্কারায় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
তিনি সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার ষড়যন্ত্রের জন্য নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করেন এবং তাকে তুরস্কের কাছে প্রত্যর্পণ করতে আমেরিকান কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। এরদোগান বলেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কৌশলগত বন্ধুরাষ্ট্র, সুতরাং তারা নিশ্চয়ই পেনসিলভানিয়া থেকে তাকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করবে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় বসবাসরত গুলেন কোনও ধরনের সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। এদিকে আবারও বিদ্রোহের চেষ্টা হতে পারে এমন আশংকাতেই সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে বলা হচ্ছে বলছেন অনেকে।
আর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, গুলেনকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হলে, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দেখাতে হবে । তিনি আরও বলেন, অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কোনও ধরনের অভিযোগ ন্যাটো সহযোগী রাষ্ট্র দুটোর সু-সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তুরস্কের এই সংকটময় মুহূর্তে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে এমন যেকোনো ধরনের কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে এবং আইনের শাসন মেনে চলতে দেশটির সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, তুর্কী সরকার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন ঘাঁটি থেকে বিমান হামলা স্থগিত রাখা হয়েছে। তুরস্কের নির্বাচিত সরকারকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে আনা একটি খসড়া প্রস্তাব মিশরের বিরোধিতার কারণে আটকে গেছে।
এদিকে তুরস্কের বেশ কয়েকজন জেনারেল পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তাসহ প্রায় তিন হাজার সৈন্যকে আটক করা হয়েছে।