‘জঙ্গি’ সাদ্দাম-নয়া কেলেংকারি-
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার মোহাম্মদপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত জঙ্গি’ সাদ্দাম হোসেনকে পুলিশ পরিচয়ে নয় মাস আগেই তুলে নেয়ার অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। তাদের দাবি, নয় মাস আগে সাদ্দামকে তার শ্বশুরবাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ‘নব্য জেএমবির নেতা’ নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান ও সাদ্দাম হোসেন নিহত হয় বলে দাবি করে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার দুর্গম এলাকা চর বিদ্যানন্দে সাদ্দামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান তার বাড়ি। তখনও মৃত্যুর খবর পাননি পরিবারের সদস্যরা। পরে একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখানো হলে তারা তাকে চিনতে পারেন। সাদ্দামের বড় ভাই মিজানুর রহমান জানান, সাদ্দামের নামে দুটি মামলা রয়েছে। একটি জাপানি নাগরিক হত্যা, অন্যটি কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম হত্যা। এ দুটি মামলার ওয়ারেন্ট তাদের বাড়িতে এসেছে।
তিনি দাবি করেন, ২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ পরিচয়ে সাদ্দামকে নিয়ে তুলে যাওয়ার পর তার আর সন্ধান পাননি তারা। রাজারহাট থানায় গিয়েছিলেন সাদ্দামের খোঁজে। তখন পুলিশ বলেছিল, তাকে আটক করা হয়নি।
সাদ্দামের বাবা তাজুল আলম মিয়া বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চাইছিলাম। কিন্তু পুলিশ জিডিও নেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘ছেলেকে যদি পুলিশ ধরেই নিয়া যায়, তাহলে বন্দুকযুদ্ধে মরে কেমনে।’ সাদ্দামের বাবা আরও জানান, পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করার পর থেকে বাড়িতে থাকে না সাদ্দাম। সেখানে গিয়ে কোনো জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত ছিল কি না তা তাদের জানা নেই।
পরিবার জানায়, সাদ্দাম পার্শ্ববর্তী কাউনিয়া উপজেলার চর তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে। পরে সে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হয়। তারা জানান, সাদ্দামকে ধরে নিয়ে যাওয়ার তিন মাস পরে তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে সাদ্দামের স্ত্রী ও সন্তান কোথায় আছে সেটা তারা জানেন না।
কুড়িগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী জানান, কুড়িগ্রামের গাড়িয়ালপাড়ায় ধর্মান্তরিত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যা মামলায় ২নং চার্জশিটভুক্ত আসামি সাদ্দাম। এই মামলার মোট ১০ জন চার্জশিটভুক্ত আসামির মধ্যে চারজন আটক রয়েছে। তিনজন আগেই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। পলাতক তিনজনের মধ্যে সাদ্দামও বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।