• সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চলমান সন্ত্রাস-নাশকতা অন্তর্ঘাত মোকাবেলায় ইলেকট্রনিক মিডিয়া সহযোগিতা করবে সরকারকে


প্রকাশিত: ৭:১৪ পিএম, ২২ জানুয়ারী ১৫ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৪ বার

সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের দেশ ‘ভাল চলার খবর দেয়ার’ পরামর্শ মেনে চলবেন বলে তাদের ‘জানিয়েছেন’ মালিকরা।বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন সরকারের মন্ত্রিসভার পাঁচ সদস্য।

দেশের পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ দাবি করে এ বিষয়টি তুলে ধরতে বৈঠকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হয় সরকারের তরফ থেকে।অন্যদিকে টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিনিধিরা বৈঠক শেষে জানান, সহিংসতা ও রাজনীতির ঘটনাগুলো ‘একসঙ্গে না মিলিয়ে’ নাশকতার ‘সঠিক চিত্র’ তুলে ধরতে সরকারের আহ্বানে তারা ‘একমত হয়েছেন’।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এই ‘মতবিনিময়ে’ অংশ নেন।

সভা শেষে আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, দেশে আন্দোলনের নামে নাশকতা ও সন্ত্রাস চলছে। তবে অনেক কিছু মানুষ জানতে পারছে না। দেশের প্রকৃত অবস্থা স্বাভাবিক। ব্যবসা, বাণিজ্য, রপ্তানি- প্রতিটি বিষয়ে স্বাভাবিক অবস্থা চলছে, এগুলো মানুষ অবহিত নয়।তিনি বলেন, এসব বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি প্রতিদিন ঢাকা থেকে মহাসড়কে যে  ৫০ থেকে ৬০ হাজার গাড়ি যাওয়া-আসা করছে, সে বিষয়টিও টেলিভিশনে আসতে হবে।

বৈশাখী টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, নিয়মিত ব্রিফিং, সহিংসতা ও রাজনীতি যেন মিলিয়ে না ফেলি- এ বিষয়ে একমত হয়েছি। সহিংসতা হলো সহিংসতা, আর রাজনীতি মানে রাজনীতি। রাজনীতির জায়গা যদি সহিংসতা দখল করে নেয় তাহলে রাজনীতি বিপদজনক জায়গায় পড়বে। আমরা বলেছি আমরা সুস্থ রাজনৈতিক ধারার পক্ষে এবং আমরা সহিংসতার বিরুদ্ধে।বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ বলেন,   টেলিভিশনের ভুল সংবাদ মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

দুই-একটি বাস পোড়ানো বা ট্রাক পোড়ানো এমনভাবে মানুষের সামনে দৃষ্টিগোচর হয়েছে যাতে তারা মনে করে সারাদেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। এ বিষয়লোর সঠিক তথ্যটা যাতে উপস্থাপিত হয়, বলেন শিল্পমন্ত্রী।

গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আমির হোসেন আমু বলেন, মিডিয়াকে জানাতে চাই,  তারা (টেলিভিশনের প্রতিনিধি) অনেককিছু ওয়াকিবহাল ছিলেন না। তাদের কাছে আমরা অনেক কিছু প্রমাণ সহকারে উপস্থাপন করেছি। তারাও কনভিন্সড এবং তারা বলছেন আন্দোলন ও রাজনীতি এগুলো নয়, এটা সন্ত্রাস ও নাশকতা। সন্ত্রাস ও নাশকতা মানুষকে গাইড করতে পারে না। এগুলো নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের কাছে তারা সঠিক তথ্য উপস্থাপন করবেন বলে আমরা একমত হয়েছি।টেলিভিশনগুলোকে এ বিষয়ে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এখানে মতবিনিময় করা হয়েছে। কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আলোচনার ভিত্তিতে ঐকমত্য হয়েছে।

মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বলেন, নাশকতাকে আমরা যেন সেনসেশনালাইজড না করি, এ ব্যাপরে কিছু মন্তব্যে আমরা একমত হয়েছি। আমাদের দেশের জন্য যা ক্ষতিকর- অবশ্যই তা আমরা করব না।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এখানে সত্যটা তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশে কিছু কিছু নাশকতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছাড়া স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এটা মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে, যেমন- ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যাম রয়েছে সে কথাও তুলে ধরা হবে।

একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বলেন, নাশকতা দমনে সরকার ও রাষ্ট্রের পাশে থেকে আমরা সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করব। এটি নাশকতা, নাশকতার বিরুদ্ধে দেশ-জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ব্যাপারে আমরা একসাথে কাজ করব।তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান সন্ত্রাস-নাশকতা, অন্তর্ঘাত মোকাবেলায় বৈঠকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

গতকালের সংবাদ ২৪ ঘণ্টা পর আপডেট করে তাজা খবর হিসাবে প্রচার করা হচ্ছে। বাসি খবরকে এভাবে তাজা বানালে মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।দেশের অধিকাংশ টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিনিধিরা এ মত বিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।