• সোমবার , ১৮ নভেম্বর ২০২৪

ঘোড়ায় জরিমানা উত্তাল সৈয়দপুর


প্রকাশিত: ১১:১৬ পিএম, ১৮ মে ২৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৪ বার

ঘোড়া মার্কার প্রার্থী দিপু দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে কোনও প্রকার প্রচারণা চালাইনি। এমনকি সেই গাড়িতে কোনও ব্যানার বা পোস্টারও লাগানো ছিল না। অথচ ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভুয়া অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের জেল প্রদান করেন।”

শফিউল আলম বাবলু : নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল দিদার দিপু ঘোড়া নিয়ে কথিত নির্বাচনি শোডাউন করার অভিযোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের রায় দেন। এনিয়ে উত্তাল সৈয়দপুর।ঘটনার পর ঘোড়া মার্কার সমর্থকেরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। শনিবারও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে সৈয়দপুরে। এই ঘটনার জের ধরে ভোটের দিন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী। সর্বত্র এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

এ সম্পর্কে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী দিপু দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে কোনও প্রকার প্রচারণা চালাইনি। এমনকি সেই গাড়িতে কোনও ব্যানার বা পোস্টারও লাগানো ছিল না। অথচ ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভুয়া অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের জেল প্রদান করেন। এখানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাই এই রায় আমি মানি না এবং জরিমানাও দেবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রতি জুলুম করা হয়েছে। প্রয়োজনে এক মাস জেল খাটবো তবু অন্যায় মেনে নেবো না।

শুক্রবার (১৭ মে) বিকাল ৪টায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই রায় না মানায় পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এনিয়ে গত দু’দিন ধরে উত্তাল সৈয়দপুর।শনিবার (১৮ মে) দুপুরে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নীলফামারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শাহিন কবির জামিন নামঞ্জুর করে দিপুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকাল ৪টায় শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কে সোনালী ব্যাংকের বিপরীত পাশে ঘোড়া মার্কার নির্বাচনি অফিসের সামনে একটি ঘোড়াসহ টমটম গাড়ি রাখা ছিল। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। ওই রায় না মানায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত তাকে জরিমানা দিয়ে মামলা নিষ্পত্তির জন্য বলা হলেও তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান-সংক্রান্ত একটি নিয়মিত মামলা করা হয়। পরে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে দিপু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে কোনও প্রকার প্রচারণা চালাইনি। এমনকি সেই গাড়িতে কোনও ব্যানার বা পোস্টারও লাগানো ছিল না। অথচ ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভুয়া অভিযোগে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের জেল প্রদান করেন। এখানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তাই এই রায় আমি মানি না এবং জরিমানাও দেবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রতি জুলুম করা হয়েছে। প্রয়োজনে এক মাস জেল খাটবো তবু অন্যায় মেনে নেবো না। অনেক প্রার্থী নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরও প্রশাসন নির্বিকার। অথচ আমরা অপরাধ না করেও আজ শাস্তির আওতায়।’

দিপুর স্ত্রী ফাতেমা দিদার বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী হেভিওয়েট হওয়ায় অনেকের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাদের গতিরোধ করতেই পরিকল্পিতভাবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রশাসন কারও ইন্ধনে প্রভাবিত হয়ে এমনটা করেছে। কারণ, একইভাবে অন্যান্য প্রার্থীরাও আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দিপুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করবো। প্রয়োজনে আদালত ও নির্বাচন কমিশনে আপিল করা হবে।’

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম শনিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রকৃত বিষয় কী তা আমরা জানি না। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুঠোফোনে কল করে ফয়সাল দিদার দিপুকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই প্রার্থীকে গ্রেফতারসহ ঘোড়া, টমটম গাড়ি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা করা হলে তিনি তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলার এজাহার পাওয়ার পর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।’