গণতন্ত্রকে কফিনে পুরে ফেলার আশঙ্কা খালেদার
বিশেষ প্রতিবেদক.ঢাকা: হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি দেশের মৃত প্রায় গণতন্ত্রকে একদিন কফিনে পুরে ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।তিনি বলেন, সরকার যেন সেই কাজটি করতেই বেশী তৎপর হয়ে উঠেছে। আমি আবারো উল্লেখ করতে চাই-হিংসা বিদ্বেষের পথ ছেড়ে আসুন একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমরা পূর্বের মত এক সঙ্গে কাজ করি। জনগণের রায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা-আস্থা আছে। আপনাদের ভয় কিসে ?
বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধানকে জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আবারো তাকে আটক করে। এঘটনায় গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তিনি গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও সরকারের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান।
খালেদা জিয়া বলেন, আমি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা এজন্য দেশ স্বাধীন করিনি, কারণ এখন যে নীতিতে সরকার দেশ চালাচ্ছে-তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেইমানী ছাড়া কিছু নয়।সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিনা ভোটের সরকার তাদের অনৈতিক ক্ষমতাকে সংহত করতে সারাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উপর যে অত্যাচারের স্টীমরোলার চালাচ্ছে-তা বর্ণনাতীত।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার দেশের আইন কানুন ও বিচারিক রায়কে পর্যন্ত অশ্রদ্ধা করছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনেক রাজনৈতিক বন্দীকে সময়মত মুক্তি না দিয়ে নানা টালবাহানায় তাদের আটকে রাখছে এবং এরপরেও কেউ জামিন নিয়ে মুক্তিলাভ করলেও কারাফটক থেকে নিত্য-নতুন সাজানো মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুনরায় আটক করে তাদের জেলে পুরছে।
সরকারের আইন শৃক্সখলা বাহিনীর এধরণের তৎপরতা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শণ ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা এ ধরনের বেআইনী কর্মকান্ড থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি। সরকারের এধরনের আচরণ মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার হরণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
বেগম জিয়া বলেন, আমরা যখন সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো পালনের উদ্যোগ নিচ্ছি এবং আমাদের দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে পূণর্গঠনের মত সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে এগুচ্ছি তখন সরকার দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নিত্য-নতুন মিথ্যা মামলায় আটক করছে, পুরনো মিথ্যা মামলায় চার্জ গঠন করে চার্জশীট প্রদান করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো বিরোধী দলকে কোনভাবেই সাংগঠনিক কাজ করতে না দেয়া।
এসব কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে মূলত সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে হাঁটছে উল্লেখ করে বিএনপি প্রধান বলেন, সারা পৃথিবীতে যখন কর্তৃত্ত¡বাদী শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটছে, একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরশাসনের বিলোপ ঘটছে-তখন শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করার দিবা স্বপ্নে বিভোর। গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে দীর্ঘ সময় দেশ শাসন করা যাবে না। আশা করি সরকারের বোধোদয় ঘটবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সরকার যে ভয়াবহ ইমেজ সংকটে নিপতিত-তাতে সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণ তাদেরকে ক্রমেই আরো জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে। সরকার এ সত্যটি যত দ্রুত অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন এবং সে অনুযায়ী একটি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন সকল দলের অংশগ্রহণে এবং তা অবশ্যই সবার দাবী অনুযায়ী একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে-তাতেই তাদের মঙ্গল।