• মঙ্গলবার , ১৯ নভেম্বর ২০২৪

খালিজ টাইমস’এ মানবতার তারকা হাসিনা


প্রকাশিত: ৩:১৭ পিএম, ১ অক্টোবর ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২৩৮ বার

খালিজ টাইমস অবলম্বনে প্রিয়া রহমান :  রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রতি মানবিক আবেদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার hasina-www.jatirkhantha.com.bd-1উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তাকে প্রাচ্যের নতুন তারকা হিসেবে অভিহিত করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বহুল প্রচারিত দৈনিক খালিজ টাইমস। তারা বলেছেন, সুচি কণ্ঠস্বর যখন হারিয়েছেন এমন সময় শেখ হাসিনার সোচ্চার হয়ে ওঠা এক বিরাট স্বস্তি। সুচি ও শেখ হাসিনা উভয়ে তাদের নিজ নিজ দেশের মুক্তি সংগ্রামের মহানায়কের কন্যা।

দু’জনই খুব কাছ থেকে ট্র্যাজেডি দেখেছেন। যদিও ফারাকটা বিশাল। মানবতা যখন বিপন্ন তখন সুচি বেছে নিলেন নিছক দর্শক হয়ে থাকার পথ আর শেখ হাসিনা দেখালেন অমায়িক দয়া ও মানবিকতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। শেখ হাসিনার প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ছোট্ট দেশটিতে একবারে ৪ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন এটা তার উদার মনের পরিচয় বহন করে।

banggobandu-hasna-joy-www.jatirkhantha.com.bdকলামিস্ট এ্যালন জ্যাকবের লেখা এক নিবন্ধে আমিরাতে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত সর্বাধিক জনপ্রিয় পত্রিকা খালিজ টাইমসে প্রকাশিত রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাচ্যের নতুন তারকা হিসেবে উল্লেখ করে প্রকাশিত এ নিবন্ধে বলা হয়, লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবন রক্ষায় সীমান্ত খুলে দিয়ে প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপন্ন মানুষের জীবন রক্ষায় শেখ হাসিনা তার যে সহমর্মিতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছেন, সে জন্য এ সময়ে তার চেয়ে বড় কোন মানবতার উজ্জ্বল নক্ষত্র দেখছি না। শিরোনামের এক কলামে জ্যাকব স্বীকার করেন, স্বৈরাচারী, ঘৃণিত গুরু এবং নামগোত্রহীন লোকদের নিয়ে লেখার আগেই আমাদের উচিত ছিল শেখ হাসিনাকে এই পাতায় উপস্থাপন করা।

জ্যাকব তার কলামে লেখেন, লেখার বিষয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই আমাকে সব সময় কোন বিষয় এবং ব্যক্তিবর্গের ব্যাপারে ভাবতে হয়, যদিও এ সপ্তাহে আমার লেখার বিষয় নিয়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো দক্ষিণ ভারতের একজন অভিনেতা এবং রাজনৈতিক মাঠে তার আশাবাদী কর্মকা- নিয়ে, কিন্তু আমি যখন বুঝতে পারলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন প্রাচ্যের নতুন তারকা তখন আমার সিদ্ধান্ত বদলালাম।

তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা এই মহৎ সুযোগটি হারিয়েছি কারণ মিয়ানমারে একজন নোবেল বিজয়ীর উজ্জ্বলতা হারানোর বিষয় নিয়ে মিডিয়া অধিক ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলো বলে। একটি অপরাধের বোঝা আমাকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আর সেটা হল গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক আবেদনটি অবজ্ঞা করায়। এতে তার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে বলে ভাষণে জানিয়েছেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যাকব বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতারা যখন বিশ্ব মানবতার কর্ণধার হন তখন আবারো আশার আলো জ্বলে ওঠে অভিবাসন সমস্যা নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত বিশ্বে। তার কর্মকান্ড প্রথমে ক্ষীণ মনে হয়েছিল, তবে রোহিঙ্গা সমস্যা প্রত্যক্ষ করতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে খালিজ টাইমস্ যখন একজন রিপোর্টার পাঠাল তখনি প্রকৃত সমস্যাটি খালিজ টাইমস্ এর সামনে চলে আসে। জ্যাকবের বর্ণনায় উঠে এসেছে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর অবর্ণনীয় দুর্দশার চিত্র। ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা খাদ্যের জন্যে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছে, জরা-জীর্ণ কুটিরে বসতি গড়েছে। এ ঘটনা আমাদের খুবই ব্যথিত করেছে।
???????????????????????????????????????????????????????
জ্যাকব তার কলামে লিখেছেন, সুচির চোখে বিশ্ব গণমাধ্যম রোহিঙ্গা সঙ্কটকে দেখার জন্য অবশ্যই অপরাধী। দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হয়ে দেশছাড়া হওয়া রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে সুচিকে অসহায় মনে হয়েছে। অনেকেই অনুধাবন করতে পারেনি যে, দুই বছর আগে তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি নির্বাচনে বিজয়ী হলেও এখন পর্যন্ত দেশটির সামরিক জান্তাই মূল ক্ষমতায় রয়েছে।

জ্যাকব আরও বলেন, যখন সুচির সবচেয়ে বেশি উচ্চকণ্ঠ হওয়ার দরকার ছিল তখন তিনি সোচ্চার হতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তথাকথিত এই আইকনের জন্য আমার বিন্দু পরিমাণ সহমর্মিতা নেই বললেই চলে। এটি অবশ্যই ত্রুটিপূর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে যখন গণতন্ত্র পছন্দসই সংখ্যাগরীষ্ঠের পক্ষে যায়। আর জান্ত ও একনায়কদের সঙ্গে সন্ধি করা সহজ হয়ে যায়। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সুচির সুচিন্তিত নীরবতা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আমি একথা বলেছি আমাদের একটি সম্পাদকীয়তে। আরও বলব, যখন মানবতার জন্য চিৎকার করে কথা বলা উচিত তখন কারও নিশ্চুপ থাকাটা আমার অপছন্দ।

জ্যাকব বলেন, সুচি কণ্ঠস্বর যখন হারিয়েছেন এমন সময় শেখ হাসিনার সোচ্চার হয়ে ওঠা এক বিরাট স্বস্তি। সুচি ও শেখ হাসিনা উভয়ে তাদের নিজ নিজ দেশের মুক্তি সংগ্রামের মহানায়কের কন্যা। দু’জনই খুব কাছ থেকে ট্র্যাজেডি দেখেছেন। যদিও ফারাকটা বিশাল। মানবতা যখন বিপন্ন তখন সুচি বেছে নিলেন নিছক দর্শক হয়ে থাকার পথ আর শেখ হাসিনা দেখালেন অমায়িক দয়া ও মানবিকতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। শেখ হাসিনার প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ছোট্ট দেশটিতে একবারে ৪ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন এটা তার উদার মনের পরিচয় বহন করে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অধিবেশন চলাকালে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে তিন লাখ শরণার্থী পেয়েছি, কিন্তু আমাদের স্থান সংকুলানের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আরও বেশি শরণার্থী গ্রহণের বিশাল হৃদয় আমাদের রয়েছে।

জ্যাকব লিখেছেন, ছোট দেশটির জন্য এই ট্র্যাজিক পরিস্থিতি সামলানোর উদারতায় অপরিসীম সাহস প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি বলেন, ১২ লাখ শরণার্থী গ্রহণের সাহস দেখিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যতিক্রম, এর সম্পদ সীমিত। এটি বাংলাদেশ সরকারের কারণে সৃষ্ট কোন সমস্যা নয়, তথাপি শেখ হাসিনা তার মানবিকতার জায়গা থেকে তবুও সরে যাননি।