• শুক্রবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

খলনায়করা ইনিংস জিততে দিচ্ছেনা ইমরান খানকে-সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা-


প্রকাশিত: ৩:৪৫ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৫ বার


আন্তজার্তিক ডেস্ক : পাকিস্তানে সরকার গঠনে নাটকীয়তায় জমে উঠেছে। জেল থেকে ছক্কা মারলেও ইমরান খান এর প্রতিপক্ষরা তাকে ইনিংস জিততে দিচ্ছে না। এর ফলে ইমরানের সমর্থকরা সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

তবে এবার যেন নাটক কিছুটা বেশিই হচ্ছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণা করতেই তিন দিন সময় নিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন ইসিপি! ফল ঘোষণা শেষ হওয়ায় এবার নাটকের পরবর্তী দৃশ্য মঞ্চস্থ হচ্ছে দেশটিতে। কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকার গঠন করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বড় দলগুলো। তবে নাটকের এই দৃশ্যে বারবার ঘুরে-ফিরে দুটি দলই আলোচনায় আসছে। একটি নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ও অন্যটি বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি। নির্বাচনে ৭৬ আসনে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে পিএমএল-এন এবং ৫৪ আসন নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পিপিপি।

গত শুক্রবার রাতেই দল দুটির মধ্যে জোট সরকার নিয়ে বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে আসতে থাকে। তবে আজ রোববার দল দুটি প্রথমবারের মতো লাহোরে আনুষ্ঠিকভাবে বৈঠকে বসে। পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো এবং কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জোট সরকার গঠনে বিলাওয়াল ও আসিফের সহযোগিতা চান শাহবাজ।

শাহবাজের এমন প্রস্তাবের জবাবে পিএমএল-এন নেতাদের পিপিপি বলেছে, সোমবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।

সূত্রের বরাতে জিও নিউজ জানায়, সরকার গঠনের বিষয়ে শলা-পরামর্শ করতে আগামীকাল সোমবার বৈঠক করবে পিপিপি। এ জন্য রোববার বিলাওয়ালকে ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে ডেকে আনেন বাবা আসিফ আলি জারদারি। তাদের বৈঠকে জোট গঠনের প্রক্রিয়া, প্রেসিডেন্ট পদটি কে পাবেন, এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।

এর আগে গত শুক্রবার রাতে স্পষ্ট হয়ে যায় এবারের নির্বাচনে কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না। ফলে শুক্রবার রাতেই জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেন নওয়াজ শরিফ। বড় ভাইয়ের এমন ঘোষণার পরই মাঠে নেমে পড়েন শাহবাজ শরিফ। তিনি পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শুক্রবার রাতে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে দেখা করেন। তাদের এই বেঠক ৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়। বৈঠক থেকেই কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে জোট সরকার গঠনের বার্তা দেন তিনি। শুধু বার্তা দিয়েই ফিরে আসেননি, তাদের সম্মতি পর্যন্ত নিয়ে আসেন শাহবাজ।

অবশ্য এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিলাওয়াল তখন বলেছিলেন, এমন কিছু ঘটেনি। তারা এখনো নির্বাচনের ফল ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন।

সেনাবাহিনীর সমর্থন চায় ইমরান এর দল-

২০১৮ সালে সেনাবাহিনীর পরোক্ষ সহযোগিতায় পাকিস্তানের মসনদে বসেন ইমরান খান। চার বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন দ্বন্দ্বে জড়ান সেনাবাহিনী ও অন্যতম বৈদেশিক মিত্র আমেরিকার সঙ্গে। যার জেরে ২০২২ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন খান। সর্বশেষ সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রবল বাধা সত্ত্বেও চমক দেখায় ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ তথা পিটিআই। এরপরই ইমরান ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেন-দরবার করছে পিটিআই এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার গওহর খান দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান ও কারাগারে আটক অন্যান্য নেতাকর্মীদের মুক্তি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের এক বক্তব্যের পরই এমন আহ্বান জানান পিটিআইয়ের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

রোববার এক বিবৃতিতে জেনারেল অসিম মুনির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নৈরাজ্য ও মেরুকরণের রাজনীতি থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে জাতির জন্য একটি স্থিতিশীল হাত ও নিরাময় স্পর্শ প্রয়োজন।

পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইংয়ের বরাতে জানা যায় জেনারেল অসিম মুনির বলেন, নির্বাচন জয়-পরাজয়ের কোনো শূন্য সমষ্টি নয়। বরং এটি জনগণের ম্যান্ডেট পূরণের একটি মহড়া। সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্যের পরই পিটিআই নেতা গওহর খান এক বিবৃতিতে জানান, রাজনৈতিক নিরাময়ের অর্থ হলো দেশে কোনে রাজনৈতিক বন্দি না থাকা।

পিটিআই-এর বর্তমান চেয়ারম্যান বলেন, পিটিআইয়ের ম্যান্ডেটকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে দেশের কোনো রাজনৈতিক নিরাময় হবে না। সেনাপ্রধানের বক্তব্যে উল্লিখিত সমন্বিত সরকার ব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেন গওহর খান বলেন, এর মানে জোট সরকার নয়। সমন্বিত সরকার বলতে প্রতিটি দলকে একটি বিষয়ে একমত হতে হবে যে তারা জনগণের ম্যান্ডেটকে সবার আগে সম্মান করবে।